কুমিল্লা, চৌদ্দগ্রাম থেকে: রাত সাড়ে ১১টা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নেই কোনো সড়ক বাতির আলো।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের পৌর এলাকায় নির্বাচনের প্রচরণার শেষ মুহূর্তে এ দৃশ্য দেখা গেলো।
কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই লতিফ কাউন্সিল প্রার্থীর সমর্থকরা জানালেন, সন্ধ্যা থেকে নতুন পোস্টার লাগানোর কাজ শুরু করেছেন তারা। এটাই শেষ। আর তো পোস্টার লাগানো যাবে না, তাই শেষ মুহুর্তে যতটুকু পারা যায় কাজ করে যাচ্ছেন।
শুধু এ ওয়ার্ডে নয়, চৌদ্দগ্রামের প্রতিটি ওয়ার্ডেই সোমবার দিনগত রাত পর্যন্ত চলেছে তুমুল নির্বাচনী প্রচারণা।
এদিকে নির্বাচনের প্রচারণার সময় শেষ হয়ে গেলেও থেমে নেই চায়ের কাপে ভোটের ঝড়। চায়ের টেবিল, বিভিন্ন মোড়ে যেখানেই দুইয়ের অধিক মানুষ জড়ো হচ্ছেন-সেখানেই জমে উঠছে ভোটের আড্ডা। মাঝে মধ্যে তর্ক-বিতর্কেও জড়িয়ে যাচ্ছেন দুই দলের সমর্থেকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নির্বাচনী প্রচারণা শেষে চায়ের টেবিলে ভোটেররা এখন ভোটের নানা বিশ্লেষণে ব্যস্ত হয়ে পরেছেন। কেমন ভোট হবে, নির্বাচনী পরিবেশই বা কেমন থাকবে, কে গলায় পরবেন বিজয়ের মালা- এমন আলোচনা এখন পুরো পৌর এলাকা জুড়ে।
তবে আলোচনার শেষ ভাগে এসে প্রাধান্য পাচ্ছে একটাই হিসাব, তা হলো ‘কাকে ভোট দিলে এলাকার উন্নয়ন হবে, অতীতেই বা কেমন সেবা পাওয়া গেছে’।
অনেকেই তো ভোটের চাওয়ার-পাওয়ার হিসাব কষতে গিয়ে এ পৌরসভাকে পূর্ব পশ্চিম দুই ভাগে ভাগ করে ফেলছেন।
ভোটাররা জানালেন, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত মিজানুর রহমান মিজান নৌকা, বিএনপি সমর্থিত গোলাম মোহাম্মদ রাব্বানী ওরফে নয়ন বাঙালী ধানের শীষ এবং সদ্য যুবলীগ থেকে বহিষ্কার হওয়া ইমাম হোসেন পাটোয়ারী জগ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন।
এর মধ্যে পূর্ব এলাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত আর পশ্চিম এলাকায় বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
পশ্চিম পাশে কম উন্নয়ন হয়েছে-এমন দাবি ভোটারদের। তবে নৌকার সমর্থকরা মনে করছেন, এ দাবি সঠিক নয়। কমবেশি সব এলাকাতেই উন্নয়ন হয়েছে, জানান মিজান।
ভোট নিয়ে অনেক গল্প করলেও এ এলাকার ভোটারেরা সংবাদ মাধ্যমে নাম বলতে চান না। অনেকেই নাম বলার বিষয়কে হিতে বিপরীত হতে পারে বলেও মত দেন।
তবে সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট সম্পাদন যেন হয়, এই একটা বিষয়ে শাহরিয়ার, নূর মোহাম্মদ, আবির হোসেন, মো. জিয়া, আবুল কালাম আজাদ, নিজাম চৌধুরী, জাহিদুল ইসলামসহ সবাই একমত প্রকাশ করলেন।
মেয়র প্রার্থী ছাড়াও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৯ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে লড়ছেন।
এ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ২৪ হাজার ৩৬৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৩১৯ এবং মহিলা ভোটার ১২ হাজার ৪৮ জন। মোট ১২টি ভোট কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ভোটাররা।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫
এটি