ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন

প্রস্তুত কুমিল্লা, আলোচনায় চৌদ্দগ্রাম-লাকসাম

আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫
প্রস্তুত কুমিল্লা, আলোচনায় চৌদ্দগ্রাম-লাকসাম ছবি: শাকিল/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, চান্দিনা থেকে: কুমিল্লা জেলার ছয় পৌরসভায় ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে চৌদ্দগ্রাম ও লাকসাম পৌরসভার ভোটগ্রহণ নিয়ে জনমনে কিছুটা আশঙ্কা বিরাজ করছে।

পৌরসভা দুটি নিয়ে চলছে আলোচনা ও গুঞ্জন।

তবে সব ধরনের বিশৃঙ্খলা মোকাবেলা করে সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পাদন করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরের পর থেকেই রাস্তায় পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি বিজিবি, র‌্যাবের টহল দেখা যাচ্ছে।

সারাদিন বাংলানিউজের সরেজমিনে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম, লাকসামসহ একাধিক পৌরসভা ঘুরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতির চিত্র দেখা যায়।
 
ভোটাররা জানান, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে দুজন মেয়র পদে মনোনয়ন জমা দেন। এরপর দল থেকে বর্তমান মেয়র মিজানুর রহমান মিজানকে সমর্থন দেওয়া হয়।
 
আর মনোনয়ন প্রত্যাহার না করে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনে লড়াই শুরু করেন সদ্য বহিষ্কার হওয়া ইমাম হোসেন পাটোয়ারি।
 
গত সপ্তাহে এই দুই পক্ষের প্রকাশ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে গাড়ি পোড়ানোসহ বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এরপর থেকেই এ পৌরসভাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় নানা গুঞ্জন ও শঙ্কা। আর বিএনপি সমর্থিত গোলাম মোহাম্মদ রাব্বানী ওরফে নয়ন বাঙালীর মাঠে না থাকা নিয়েই চলছে মুখরোচক আলোচনা।
 
এছাড়া নির্বাচনী প্রচারণার সময়েও বেশ কয়েকবার উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
 
এদিকে গত সপ্তাহে লাকসাম পৌরসভার ভোটকে কেন্দ্র করে সাত নম্বর ওয়ার্ডের গাজীমুরা এলাকায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়। এ কারণে ভোটাররা মনে করছেন এ পৌরসভাতেও বিশৃঙ্খলা হতে পারে।

এ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন অধ্যাপক আবুল খায়ের আর বিএনপির মনোনীত প্রার্থী শাহনাজ আক্তার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে মকসুদুর রহমান ও স্বতন্ত্র থেকে নূর মোহাম্মাদ মেয়র পদে নির্বাচন করছেন।
 
রবিউল ইসলাম, আক্তার হোসেনসহ একাধিক ভোটার জানান, ক্লিন ইমেজের জন্য আবুল খায়ের ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করেছেন। তার স্বামী গুম হওয়ার ঘটনায় সহানুভূতি নিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করেছেন শাহনাজ আক্তার।
 
আইন শৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, প্রতিটি পৌরসভাকে গুরুত্বপূর্ণ ভেবেই আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। এই ছয় পৌরসভায় মোট দুই হাজার ৩০৭ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কর্তব্য পালন করবেন।
 
তিনি বলেন, পৌর এলাকাগুলো খুব বেশি বড় নয়, কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি অনেক ভালো রয়েছে। এ কারণে কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা হওয়ার সম্ভবনা নেই। পাঁচটি ভোট কেন্দ্র মিলে একটি মোবাইল পার্টির রয়েছে। যেন তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
 
এ হিসেবে চৌদ্দগ্রামে ১২টি ভোটকেন্দ্রে তিনটি মোবাইল পার্টির থাকার কথা কিন্তু সেখানে চারটি মোবাইল পার্টি রাখা হয়েছে, সুতরাং আশঙ্কার কিছু নেই- যোগ করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন।
 
ছয় পৌরসভায় মোট ৮৬টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ৬৬টি ভোট কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। অন্য চারটি পৌরসভা হলো দাউদকান্দি, বড়ুরা, চান্দিনা ও হোমনা। এই চার পৌরসভায় তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

প্রতিটি পৌরসভাতেই যথেষ্ট আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

রাত পোহালেই ভোট দিতে যাওয়া ভোটারদের এখন একটাই চাওয়া তারা যেন সুষ্ঠুভাবে কেন্দ্রে গিয়ে নিজের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫
একে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।