ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে: সকাল ৭টা থেকে ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন সুরুজান। পঞ্চাশোর্ধ্ব এ নারী ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের তরফদার বাড়ি এলাকার বাসিন্দা।
অনেকক্ষণ ধরে পুলিশ ও আনসার সদস্যকে অনুরোধ করছিলেন, একটু আগে নিজের ভোটের সিরিযালের ব্যবস্থা করে দেওয়ার। কেমন প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন, জিজ্ঞাসা করতেই সুরুজানের উত্তর, ‘যোগ্য দেইখাই সিল দিমু। ভুল লোকরে ভোট দিয়া পরে পস্তাইবার পারতাম না’।
সুরুজানের সঙ্গে কন্ঠ মেলান মাজেদা, পারভীন আক্তারসহ আরো জনাপঞ্চাশেক নারী ভোটার। ভোট দেওয়ার জন্য সকাল থেকেই লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন তারাও।
পারভীন আক্তার বললেন, ‘দেড় ঘণ্টা ধইরা খাড়ই রইছি। ভোট দিবার পাইতাছি না। সব আনন্দই তো মাটি হইয়া যাইতাছে’।
মাজেদা বলেন, ‘সকালে ভোট দিলে ভালো হয়। কোনো উচ্ছৃঙ্খল হয় না। গণ্ডগোল হয় না। এ কারণেই তাড়াতাড়ি ভোট দিবার আইছিলাম। কিন্তু হেই দেরিই হইয়া গেলো’।
এ ভোটকেন্দ্রে নারী ভোটারদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলো। তবে এ কেন্দ্রের নারী ভোটারদের অভিযোগ, এ কেন্দ্রে অনেকটাই ধীরগতিতে ভোটগ্রহণ চলছে। এ কারণে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে ভোট দিতে হচ্ছে নারীদের। এ নিয়েই অনেক নারী ভোটার ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলার সময়েই এক নারী ভোটার বলেন, ‘আমার সিরিয়ালডা একটু আগে দেইন না। বাড়িত গিয়া রান্দা-বাড়ি (রান্না-বান্না) করতে হইবো’। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন ওই পুলিশ সদস্য।
সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার সৈয়দ আহমেদ জানান, এ ভোটকেন্দ্রের ৩টি বুথে নারীরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। এখানে মোট ভোটার ২ হাজার ৮৯ জন। পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা কিছুটা বেশি। ১ হাজার ১৭ জন পুরুষ ভোটারের বিপরীতে নারী ভোটার ১ হাজার ৭২ জন।
ধীরগতিতে ভোট হচ্ছে কি-না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, দ্রুতগতিতেই ভোট হচ্ছে। নারীরা সকাল সকাল ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে চাচ্ছেন। এ কারণেই তারা এসব বলছেন।
একই রকম কথা জানান ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জামিলা শবনম। তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই ভোট হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
এএসআর