কিশোরগঞ্জ: নির্বাচনের আগের দিন কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে উত্তেজনা ছড়ালেও বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) জেলার সাত পৌরসভায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ চলছে।
সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর থেকেই এসব পৌরসভার বিভিন্ন কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন ভোটাররা।
শীতকে উপেক্ষা করে উৎসবে মেতে উঠছেন তারা। বিভিন্ন কেন্দ্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য।
কিশোরগঞ্জ সদর, হোসেনপুর, কটিয়াদি, বাজিতপুরসহ বিভিন্ন পৌরএলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভা:
কিশোরগঞ্জ সদর পৌরসভা নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ চলছে। দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠেয় পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মাহমুদ পারভেজ (নৌকা প্রতীক), বিএনপি থেকে মাজহারুল ইসলাম কাঞ্চন (ধানের শীষ) নির্বাচন করছেন।
আর কমিউনিস্ট পার্টির আবুল হাসেম (কাস্তে প্রতীক) অংশ নিচ্ছেন নির্বাচনে।
এ পৌরসভায় সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ৪৩ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে ৭ জন প্রার্থী। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৬১ হাজার ৩১০। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৯ হাজার ৯৮৭ এবং মহিলা ৩১ হাজার ৩২৩। ভোট কেন্দ্র রয়েছে ২৬ টি।
কটিয়াদী পৌরসভা:
কটিয়াদী পৌরসভার মেয়র পদে লড়ছেন আওয়ামী দলীয় প্রার্থী শওকত ওসমান শুক্কুর (নৌকা প্রতীক), বিএনপি দলীয় প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র তোফাজ্জল হোসেন খান (ধানের শীষ) এবং জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট আলাউদ্দিন আহমেদ (লাঙ্গল প্রতীক)।
সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ৩০ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে ৯ জন প্রার্থী। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ২৫ হাজার ৯৫৭। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৬৩৫ এবং মহিলা ১৩ হাজার ৩২২। ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১১ টি।
করিমগঞ্জ পৌরসভা:
করিমগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হলেন কামরুল ইসলাম চৌধুরী মামুন (নৌকা প্রতীক), বিএনপি দলীয় প্রার্থী আশরাফ হোসেন পাভেল (ধানের শীষ) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন বর্তমান মেয়র আব্দুল কাইয়ুম (জগ প্রতীক)।
সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ৩৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে ১৩ জন প্রার্থী। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ২১৪। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ১২৩ এবং মহিলা ১০ হাজার ৯১। ভোট কেন্দ্র রয়েছে ০৯ টি।
হোসেনপুর পৌরসভা:
হোসেনপুর পৌরসভায় আওয়ামী দলীয় প্রার্থী আব্দুল কাইয়ুম খোকন (নৌকা প্রতীক), বিএনপি দলীয় প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান (ধানের শীষ), আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী প্রাথী সৈয়দ হোসেন হাছু (নারকেল গাছ) ও আব্দুল কাদির স্বপন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার আলী মৃধা রতন (জগ)।
সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ৫০ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে ১২জন প্রার্থী। এ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ৩৩০। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ১৯৪ এবং মহিলা ৮ হাজার ১৩৬। ভোট কেন্দ্র রয়েছে ০৯ টি।
কুলিয়াচর পৌরসভা:
কুলিয়ারচরে পৌর মেয়র প্রার্থী আছেন দু’জন। কারা হলেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী- আবুল হাসান কাজল(নৌকা প্রতীক) ও বিএনপি দলীয় প্রার্থী শাফি উদ্দিন (ধানের শীষ)।
এ পৌরসভায় মোট ২১ হাজার ৪১৪ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে, পুরুষ ১০ হাজার ৮৮৭ এবং ১০ হাজার ৫২৭ জন নারী ভোটার রয়েছেন। এ পৌরসভার মোট ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১০টি। এবারের পৌর নির্বাচনে কুলিয়ারচরে ৩৫ জন কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত নারী আসনে ১২ জন অংশ নিচ্ছেন।
বাজিতপুর পৌরসভা:
বাজিতপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন আশরাফ (নৌকা প্রতীক) ও বিএনপি মনোনীত এহেসান কুফিয়ার (ধানের শীষ) সঙ্গে নির্বাচনী দৌড়ে আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শওকত আকবর (জগ প্রতীক) ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী সেলিম খান (হাত পাখা)।
পৌরসভায় ১২টি কেন্দ্রে ভোটার রয়েছে ২১ হাজার ৩০ জন। পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৩৭৮ ও নারী ভোটার ১০ হাজার ৬৫২ জন। ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১২ টি।
ভৈরব পৌরসভা:
ভৈরব পৌরসভার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফখরুল আলম আক্কাছ (নৌকা প্রতীক) ও বিএনপি দলীয় প্রাথী হাজী শাহীন (ধানের শীষ)।
পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৫৫ জন অংশ নিয়েছেন। আর সংরক্ষিত আসনে ১৪ জন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভায় মোট ৬৭ হাজার ৪৩৬ ভোটারের বাস। এরমধ্যে পুরুষ ৩৩ হাজার ৬৮৬ এবং নারী ভোটার রয়েছেন ৩৩ হাজার ৭৫০ জন। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ‘ক’ শ্রেণীর এ পৌরসভায় মোট ৩৫টি কেন্দ্র রয়েছে।
জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, কিশোরগঞ্জের ৭ পৌরসভায় ১১২টি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে।
কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
এদিকে নির্বাচনের আগেরদিন বাজিতপুর পৌরসভায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কমএক্ষ তিনজন আহত হন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
জেডএফ/টিআই/এমএ