ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন

পৌর নির্বাচন

ভুয়াপুর বাদে ‘সফল’ টাঙ্গাইল

ইলিয়াস সরকার, সুমন রায় ও এসএম শহীদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
ভুয়াপুর বাদে ‘সফল’ টাঙ্গাইল ছবি: রাজীব/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

টাঙ্গাইল থেকে: প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে টাঙ্গাইলের ৮টির মধ্যে ৬টিতে কোনো ধরনের  অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

শুধু ভুয়াপুরে আওয়ামী লীগের এক বিদ্রোহী প্রার্থীর ওপর হামলা চালানো হয়।

দুই কাউন্সিলর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে ধনবাড়ীতেও। এজন্য কিছুক্ষণ ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়।

এরপরও  বিএনপির দুই প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের একজন বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের কথা জানান।

বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় উৎসবমুখর পরিবেশে জেলার ৮ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। প্রতিটি পৌরসভার কেন্দ্রগুলোতেই ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।  

ভোট বর্জন:
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে  কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন মধুপুর পৌরসভার বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সরকার শহীদুল ইসলাম শহীদ।

এর কিছুক্ষণ পরে একই অভিযোগে ভোট বর্জন করেন গোপালপুর পৌরসভার  বিএনপি মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম রুবেল।

এর আরও কিছু পৌরসভার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী বেলায়েত হোসেনও নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

সংঘর্ষ:
সকালে ভোট শুরুরর পর কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে ভূয়াপুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তারিকুল ইসলাম চঞ্চলের ওপর দলের মনোনীত নৌকার প্রার্থী মাসুদুল হক মাসুদের সমর্থকরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আহত অবস্থায় তাকে স্থানীয় একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলের আরেকটি পৌরসভা ধনবাড়ীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নবাব ইনস্টিটিউটে আওয়ামী লীগ সমর্থক কাউন্সিলর প্রার্থী রেজাউল করিম লিটন ভোট দিতে গেলে দুই কাউন্সিলের প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ সময় পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শট গানের ছয় রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ।

এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার শামীম আরা রিনি বাংলানিউজকে বলেন, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় অল্প কিছু সময় ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার পর আবার ভোট নেয়া হয়।

এদিকে টাঙ্গাইলের মধুপুরে ৭ নং ওয়ার্ডেও দুই কাউন্সিলের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর হোসেন ভূঁইয়াসহ তিন জন আহত হয়েছে।  

এছাড়া ভোট শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে সদর পৌরসভার বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে তাকুর পাড়ার ইব্রাহিমের ছেলে তনু দেওয়ানকে আটক করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সানজিদা শাহনাজ। তনুর বিরুদ্ধে ২৫টি জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।

তবে ওই ২৫টি ভোট বাতিল করা হয়েছে বলে জানান প্রিজাইডিং অফিসার মো.নুরুল ইসলাম।

টাঙ্গাইলের ১টি পৌরসভার মধ্যে ৮টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে সদর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন মো. জামিলুর রহমান মিরন, বিএনপির মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাতী মাহমুদুল হক সানু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আবদুল কাদের, খেলাফত মজলিশ এর হাসনাত আল আমিন।

এ পৌরসভায় ১৮ টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৭৪ জন এবং ৬ টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৩৩ জন প্রতিদ্বন্দিতা করেন।

ভুয়াপুরে আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান মেয়র মাসুদুল হক মাসুদ, বিএনপির প্রার্থী আবদুল খালেক মন্ডল, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আজহারুল ইসলাম ও তারিকুল ইসলাম চঞ্চল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

আর কালিহাতী পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেন আনছার আলী বিকম ও বিএনপির প্রার্থী আলী আকবর জব্বার এবং হুমায়ুন খালিদ নামে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন।  

মির্জাপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের থেকে সাহাদৎ হোসেন সুমন ও বিএনপি থেকে হযরত আলী নির্বাচন করেন।  

গোপালপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের রকিবুল হক ছানা এবং বিএনপির প্রার্থী খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম রুবেল ও আওয়ামী লীগের বেলায়েত হোসেন। এর মধ্যে রুবেল ও বেলায়েত ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

মধুপুর পৌরসভায় বর্তমান মেয়র সরকার শহীদুল ইসলাম বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাসুদ পারভেজ। কিন্তু কারচুপির অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছেন শহীদুল ইসলাম।

সখীপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু হানিফ আজাদ ও বিএনপির প্রার্থী নাছির উদ্দিন। রয়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ছানোয়ার হোসেন সজীব; জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে আয়নাল হক সিকদার, ফারুক হোসেন (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি)।

ধনবাড়ী পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেন-খন্দকার মনজুরুল ইসলাম তপন ও বিএনপি প্রার্থী এএমএ ছোবহান। প্রতিদ্বদ্বিতা করছেন জাতীয় পার্টির (এরশাদ) ফেরদৌস আহমেদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জহিরুল হক হেলাল।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০,২০১৫
ইএস/এমএ

** ব্যালট নিয়ে ভাগলেন চেয়ারম্যান

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।