ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন

একে অপরের সমালোচনা করে ৩ ভাইয়ের ভোটযুদ্ধ!

মাহফুজুল ইসলাম বকুল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২১
একে অপরের সমালোচনা করে ৩ ভাইয়ের ভোটযুদ্ধ!

রংপুর: আসন্ন চতুর্থ দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রংপুরের বদরগঞ্জে আপন তিন ভাই চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নিজ নিজ প্রতীকে ভোট চেয়ে কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেননা।

পারিবারিক বিরোধ ও জেদ থেকে তারা ভোটযুদ্ধে নেমেছেন দাবি তাদের।

আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য চতুর্থ দফার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বদরগঞ্জ উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তারা হলেন, শহিদুল হক (আনারস প্রতীক), মোতালেব হোসেন (ঘোড়া প্রতীক) এবং একরামুল হক (মোটরসাইকেল প্রতীক)।

এলাকাবাসী জানায়, পারিবারিক মনোমালিন্য ও বিরোধের জেরে তিন ভাই চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর আগে, শহিদুল ইসলাম ও একরামুল হক চেয়ারম্যান থাকলেও জেদের বসে আরও এক ভাই এবার ভোটের মাঠে নেমেছেন। শহিদুল সর্বশেষ এবং একরামুল নব্বইয়ের দশকে চেয়ারম্যান ছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ছয় প্রার্থী থাকলেও ভোটারদের আড্ডার আলোচনায় রয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী আপন তিন ভাই। তারা একই পরিবারের হলেও ভোটযুদ্ধে কেউ কাউকে ছাড় দিয়ে কথা বলেছেন না। এতে তাদের নিয়ে চলছে সমালোচনাও।  

বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল হক ২০০৩ সাল থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে কালুপাড়া ইউনিয়নের দায়িত্ব পালন করছেন। তার বড় ভাই একরামুল হক ১৯৯১-৯৫ সালে চেয়ারম্যান ছিলেন। তবে দুই ভাইয়ের সঙ্গে মেজো ভাই মোতালেব হোসেনও প্রার্থী হয়েছেন। গত মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পা হারিয়েছেন তিনি। অসুস্থ শরীর নিয়েই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট চাচ্ছেন।

ওই ইউনিয়নের ভোটার কৃষক বাবু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, তাদের তিন ভাইকে নিয়ে আমরা চিন্তিত। তারা যেভাবে একে অপরের সমালোচনা করে ভোট চাইছেন, এতে গ্রামের মানুষ হাটে বাজারে, চায়ের দোকানে বসে হাসাহাসি করছেন। তবে ভোটারদের এসব অভিযোগ নিয়ে চিন্তিত নন বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল হক। তিনি জানান, তার বড় দুই ভাই ঈর্ষান্বিত হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হয়েছেন। ভোটাররা এলাকার উন্নয়ন দেখে ভোট দেবেন।  

সাবেক চেয়ারম্যান একরামুল হক বলেন, শহিদুল হক আমার ছোট ভাই। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থেকে তিনি এলাকার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। ভোটারদের অনুরোধে আমি প্রার্থী হয়েছি। আমার প্রতি এলাকার মানুষের আস্থা রয়েছে।  

অন্যদিকে মেজো ভাই মোতালেব হোসেন বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায়। আমরা সম্পর্কে ভাই হলেও অতীত দেখেই ভোটাররা পক্ষ নেবেন। আমার ছোট ভাই শহিদুল চেয়ারম্যান হিসেবে ইউনিয়নে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো কাজ করেনি। ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ভোটাররা তার প্রতি বিমুখ।  

এ বিষয়ে রংপুরের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ফরহাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে। সুষ্ঠু ও অবাধ ভোটগ্রহণে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ভোট সুষ্ঠু পরিবেশে নেওয়া হবে। এসময় তিনি ভোটারদের সুশৃঙ্খলভাবে ভোটপ্রদানের আহবান জানান।

আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদসহ বদরগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে গঙ্গাচড়া উপজেলার নয়টি ইউনিয়নেও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থী ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।