ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

বিনোদন

বিসমিল্লাহ্ খান, শাস্ত্রীয় সংগীতের অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩
বিসমিল্লাহ্ খান, শাস্ত্রীয় সংগীতের অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব বিসমিল্লাহ্ খান

বিসমিল্লাহ্ খান, উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সংগীতের অবিস্মরণীয় এক ব্যক্তিত্ব। যিনি সানাইকে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত বাদনের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে ভারতের উচ্চাঙ্গ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতে ওস্তাদ উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন।

ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পীদের মধ্যে তিনি তৃতীয় যিনি ভারতরত্ন পদক পেয়েছেন। তিনি পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ, পদ্মশ্রীর মতো ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদকেও সম্মানিত হয়েছেন। এছাড়াও অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছে ওস্তাদ বিসমিল্লাহ্ খান।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) তার জন্মদিন। ১৯১৬ সালের আজকের এই দিনে ভারতের বিহারের বক্সারে জন্ম নেন বিসমিল্লাহ্ খান। তার পূর্বপুরুষরা বিহারের ডুমরাও রাজ্যের রাজ সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন। ওস্তাদ বিসমিল্লাহ্ খানের সঙ্গীত গুরু ছিলেন প্রয়াত আলী বকস্ বিলায়াতু। যিনি বারাণসীর বিশ্বনাথ মন্দিরের সানাই বাদক ছিলেন।

ভারতের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে সানাইকে যন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার কৃতিত্ব ওস্তাদ বিসমিল্লাহ্ খানের। ১৯৩৭ সালে কলকাতায় অল ইন্ডিয়া মিউজিক কনফারেন্সে সানাই বাজিয়ে একে ভারতীয় সঙ্গীতের মূল মঞ্চে নিয়ে আসেন তিনি। ১৯৫০ সালের দিল্লীর লাল কেল্লায় অনুষ্ঠিত ভারতের প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসে বিসমিল্লাহ্ খানের পরিবেশনা মুগ্ধ করেছিল ভারতবর্ষকে।

শুধু ভারত নয় আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক, কানাডা, পশ্চিম আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন, জাপান, হংকংসহ ইউরোপের দেশগুলোতেও ওস্তাদ বিসমিল্লাহ্ খান তার সঙ্গীত প্রভা ছড়িয়েছেন।

এতো সুনাম অর্জন কার সত্ত্বেও অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করতেন ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান। জীবনের পুরোটাই কাটিয়েছেন বারাণসীতেই। সাইকেল কিংবা রিকশাই ছিল তার চলাচলের মূল বাহন। অত্যন্ত অন্তর্মুখী এই সঙ্গীত গুরু বিশ্বাস করতেন যে সঙ্গীত শোনার বিষয়, দেখার বা দেখাবার নয়।

চলচ্চিত্রে ওস্তাদ বিসমিল্লাহ্ খানের সংযোগ ছিল, তবে সেটি অতি সামান্য। ‘সনাদি অপন্যা’ চলচ্চিত্রের ডা: রাজকুমার চরিত্রের জন্য সানাই বাজিয়েছিলেন তিনি। সত্যজিৎ রায়ের ‘জলসাঘর’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এবং গুঞ্জে উঠে সানাইয়ের অংশে সানাই বাজিয়েছিলেন তিনি।  

ওস্তাদ বিসমিল্লাহ্ খানের জীবন এবং কর্মের ওপর প্রামাণ্যচিত্র ‘সঙ্গ মিল সে মুলাকাত’ নির্মাণ করেছিলেন শক্তিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা গৌতম ঘোষ। এতে ওস্তাদ সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। বিজয় ভাট পরিচালিত দক্ষিণী সিনেমা ‘সানাদি আপ্পান্না’তে সানাইবাদক আপ্পান্নার জীবনের চলচ্চিত্রায়নের নেপথ্যে সানাই বাজাতে দেখা গিয়েছিল বিসমিল্লাহ্ খানকে।

২০০৬ সালের ২১ আগস্ট বারাণসীর হেরিটেজ হসপিটালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওস্তাদ বিসমিল্লা খান মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে ভারত সরকার একদিনব্যাপী জাতীয় শোক পালন করেছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।