সালটা ১৯৯৩, বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয় খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা বরকত উল্লাহ্ পরিচালিত ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিক নাটক। যেখানে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান আবদুল কাদের।
নাটকে তাকে দেখা যায় তিন সদস্যের মাস্তান দলের বাকের ভাইয়ের (আসাদুজ্জামান নূর) সহকারীর চরিত্রে। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি আবদুল কাদেরকে। আমৃত্যু অভিনয় করে গেছেন তিনি।
‘বদি’খ্যাত এই অভিনেতা নেই আজ তিন বছর। ২০২০ সালের আজকের এই দিনে (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন অভিনেতা আবদুল কাদের। তার বাবার নাম আবদুল জলিল, মায়ের নাম আনোয়ারা খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন আবদুল কাদের।
কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষকতা দিয়ে। সিংগাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে শিক্ষকতা করেন। এর পর বিটপী বিজ্ঞাপনী সংস্থা এবং ১৯৭৯ সালে আন্তর্জাতিক কোম্পানি বাটায় চাকরি নেন। ১৯৭২ সালে টেলিভিশন ও ১৯৭৩ সালে রেডিও নাটকে অভিনয় শুরু করেন তিনি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অমল চরিত্রের মাধ্যমে আবদুল কাদেরের নাটক দিয়ে অভিনয়ের শুরু। থিয়েটারের প্রায় ৩০টি প্রযোজনার সহস্রাধিক প্রদর্শনীতে অভিনয় করেছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘এখনও ক্রীতদাস’, ‘তোমরাই’, ‘স্পর্ধা’, ‘দুই বোন’ এবং ‘মেরাজ ফকিরের মা’।
টেলিভিশনে ২ হাজারের বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন আবদুল কাদের। উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে- ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘মাটির কোলে’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘শীর্ষবিন্দু’, ‘সবুজ সাথী’, ‘তিন টেক্কা’, ‘যুবরাজ’, ‘আগুন লাগা সন্ধ্যা’, ‘প্যাকেজ সংবাদ’, ‘সবুজ ছায়া’, ‘কুসুম কুসুম ভালোবাসা’, ‘নীতু তোমাকে ভালোবাসি’, ‘আমাদের ছোট নদী’, ‘দুলাভাই’, ‘অজ্ঞান পার্টি’, ‘মোবারকের ঈদ’, ‘বহুরূপী’, ‘এই মেকআপ’, ‘ঢুলি বাড়ি’, ‘সাত গোয়েন্দা’, ‘এক জনমে’, ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’, ‘খান বাহাদুরের তিন ছেলে’ ইত্যাদি।
আবদুল কাদের অভিনয় করেছেন বড় পর্দাতেও। ‘রং নাম্বার’সহ কয়েকটি সিমেমায় তিনি অভিনয় করেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি বেশকিছু বিজ্ঞাপনের কাজও করেছেন এ অভিনেতা। এ ছাড়া তিনি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় টিভি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত শিল্পী ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩
এনএটি