কান (ফ্রান্স) থেকে : প্যালেস দ্য ফেস্টিভ্যাল থেকে মার্শে দু ফিল্ম বিভাগের দিকে সকাল থেকে দুপুর অবধি অনায়াসে চলাফেরা করা যায়। ঘড়ির কাঁটা দেড়টা ছুঁই ছুঁই করলে লালগালিচার প্রস্তুতি শুরু হতেই রাস্তার সামনে ব্যারিকেড দিয়ে ফেলে নিরাপত্তাকর্মীরা।
সমুদ্র সৈকত ও মার্শে দু ফিল্ম বিভাগে একচক্কর দিতে হবে মনস্থির করে হাঁটা শুরু করতেই চোখে পড়লো দুই তরুণ টাক্সেডো পরে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা করছেন। তাদের প্ল্যাকার্ড। এখানে হাতে কিছু থাকা মানেই টিকেট চেয়ে অনুরোধ করা। কিন্তু এই তরুণরা মেয়েদের নিত্য ব্যবহার্য পণ্যের প্রচারণায় নেমেছেন। তাদের ছবি তুলে এগোতে থাকলাম। অনেকটুকু পথ ব্যারিকেড দেওয়া। অগত্যা ফরাসিদের মতোই হাসিমুখে এই বিড়ম্বনা মেনে নিতে হচ্ছে। তবে লাভ যে একেবারে হয়নি তা না। বিলাসবহুল হোটেল ম্যাজেস্টিক ব্যারিয়েরের সামনে হলিউডের 'হাঙ্গার গেমস' সিরিজের শেষ ছবির বড়সড় কয়েকটা পোস্টার চোখে পড়লো। বেশ জ্বলজ্বল করছে। সব পোস্টারই চলমান। এটাকে সাধারণত মোশন পোস্টার বলা হয়।
রাস্তা পেরিয়ে উৎসবের সব ছবির সংগ্রহশালা বুথের আগের পথটা একটু আলাদা মনে হলো। মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করতেই দেখি শ্যারন স্টোনের স্বাক্ষর আর হাতের ছাপ! আরও আছে। নির্মাতা সিডনি লুমেট, জেমস বন্ড ছবির অভিনেতা টিমোথি ডালটন, অভিনেতা ডেভিড মর্স-সহ অনেকের হাতের ছাপ আর স্বাক্ষর রয়েছে পথটিতে।
পথ থেকে চোখ তুলতেই ভিড়মি খেয়ে পড়লাম। ইয়া বিশাল দুই নারী-পুরুষ! দুপুর গড়িয়ে গেলেও খবরের খোঁজে খাওয়া হয়নি, ভাবলাম উল্টাপাল্টা কিছু দেখছি কি-না। নাহ, ঠিকই তো আছে। আসলেই তো কল্পিত ভূতের মতো উঁচু তারা। দু'জনই বেশ সেজেছেন। তারা নিস-ম্যাটিন ফেস্টিভ্যাল নামের একটি পত্রিকা বিলি করছেন। কোনো ইউরো লাগবে না বুঝতে পেরে মেয়েটার কাছ থেকে এক কপি নিলাম। তিনি 'মার্সি' বলে সামনে এগিয়ে গেলেন। তাদের দিকে সবারই চোখ পড়ছে। অতো উঁচু হয়ে হাঁটলে কারইবা চোখ এড়াবে।
মিস্টার গালিভার ও মিস গালিভারের কাছ থেকে চোখ সরিয়ে এগোতে থাকলাম। ভারতীয় প্যাভিলিয়নে ঢুকে ক্যাটালগ ঘেঁটে দেখলাম। পরিচিত তেমন কাউকে না পেয়ে সমুদ্র সৈকতমুখী হওয়াই বাঞ্চনীয় মনে হলো। যথারীতি আজও বিপুল মানুষের সমাগম এখানে। মেয়েরা বিকিনি আর ছেলেরা কোয়ার্টার কিংবা অন্তর্বাস পরে সূর্যস্নান করছে। শিশুদের নিয়ে অভিভাবকরা সুনীল জলে ভিজছেন। বিচ ভলিবলও খেলা হচ্ছে। সূর্যস্নানের পর সাগরে গা ভিজিয়ে তীরে এলে গোসলের ব্যবস্থা আছে ঝরণায়।
সমুদ্র সৈকতের নামার পথের উল্টো দিকে আইসক্রিমের দোকান। এ সারিতে এরকম দোকান আরও কয়েকটা চোখে পড়লো। সবটাতেই ভিড় লেগে আছে। ফ্রান্সের অন্যান্য শহরের মতো কানেও সূর্য ডোবে রাত ৯টারও পরে। তাই দিনের বেশিরভাগ সময়ই থাকে গরম। আইসক্রিমের ব্যবসা তাই রমরমা। তবে কান উৎসব হচ্ছে বলেই এই জমজমাট ব্যাপার-স্যাপার!
(বাংলানিউজে কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সব খবর প্রকাশিত হচ্ছে www.rabbitholebd.com এর সৌজন্যে। )
ফ্রান্স সময় : ২২২০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৫
জেএইচ
** অনুরোধের ঢেঁকি, টিকেট প্লিজ...
** সোনম যখন নীল পরী!
** রূপে-গুণে অনন্যা কেট ব্ল্যানচেট
** দেখা দিলেন ঐশ্বরিয়া
** পাঁচ ঘণ্টায় তিন রকম সোনম
** কানের লালগালিচায় ‘পরবাসিনী’র নায়িকা
** জনারণ্যে জমজমাট সব
** দেখা দিলেন ঐশ্বরিয়া
** হঠাৎ ডায়েন ক্রুজারের বিকিনি!
** ম্যাকোনাহে ও নাওমি ওয়াটসের সঙ্গে কিছুক্ষণ
** শর্টস আর স্কার্টের ভিড়ে তারা দু'জন
** কানে শোনা, কানে দেখা
** কান পেতে রই
** সব আকর্ষণ কানজুড়ে
** এলেন উডি অ্যালেন!
** বন্ডকন্যা ও বন্ডের অর্ধাঙ্গিনীর সামনে
** কানে সামনের সারিতে নারীরা
** মেক্সিকান রূপের রানীর গল্প
** বাংলাদেশ ভালো খেলছে শুনেছি : শার্লিজ থেরন
** কান উৎসবের পর্দা উঠলো
** কানের লালগালিচায় ক্যাটরিনা
** কান নিয়ে কানাকানি!
** ষাট বছরে স্বর্ণপাম
** কান উৎসবের খুঁটিনাটি
** কানে চোখ রাখুন
** প্যারিসে এক টুকরো কান
** রোড টু কান