কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনী দিয়ে পরিণীতি চোপড়াকে মঞ্চের পেছনে নিয়ে যাওয়া হলো। এরপর তিনি মঞ্চে ‘আসছেন, আসবেন’ বলে উধাও আরও দেড় ঘণ্টা।
বিভিন্ন হাউসের ফ্যাশন শো চলছে। আর একটু পেছনে পড়ে যাওয়া দর্শকরা ঘুরছেন, ফিরছেন; বারবার জায়গা বদলাচ্ছেন। কোথায় বসলে পরিণীতিকে ঠিকঠাক দেখা যাবে, ভাগ্য ভালো থাকলে চোখাচোখিও জুটে যেতে পারে!
দর্শকদের এই পায়চারি, অস্থিরতায় শৃংখলা ঠিক থাকলো না আর। জটলা লেগে গেলো এখানে সেখানে।
প্রত্যেকের হাতে হাতে মোবাইল। ক্যামেরা স্ট্যান্ডবাই। সামনে টিভি ক্যামেরা-আলোকচিত্রীদের ভিড়। মঞ্চ আঁধার। এর মধ্য দিয়েই ঘোষণা হলো ‘দ্য বিউটিফুল… ওয়ান অ্যান্ড অনলি…’। বাকি কথা আর বলার দরকার পড়ে না। মূহুর্মূহু করতালির আড়ালে ঢাকা পড়ে যায় ঘোষিকার স্বর।
এরপর বুক ঢিপঢিপ করা আরও এক মিনিট। সবার চোখ স্থির। এ মুহূর্তে একটি পলক সমান সময়েরও মূল্য অনেক। একটুখানি বেখেয়ালে মিস হয়ে যেতে পারে অনেক কিছু। তবে এই বাড়াবাড়ি রকমের মনোযোগের ফলে, একটু পেছনে বসে থাকা দর্কদের জন্য ঝামেলাই হয়ে গেলো।
পেছনের লোকগুলোকে আড়াল করে সামনে ততক্ষণে সবাই দাঁড়িয়ে পড়েছেন। এই স্মরণীর সময়কে ক্যামেরাবন্দি করতেই হবে। অনেকে আবার মোবাইলটা ধরে রেখেছেন সেলফি-মুডে। মোমের মূর্তি কিংবা পোস্টার নয়; সেলফিতে স্বয়ং-জীবন্ত পরিণীতি! স্মৃতি হিসেবে এ ছবির মূল্য যে কতো, সেটা পরিণীতি-ভক্ত মাত্রই অনুমান করতে পারেন!
অবশেষে পরিণীতি এলেন। লম্বা কালো গাউন দু’হাতে সামলাতে সামলাতে সোজা হেঁটে এলেন। সেই স্বভাবজাত হাসিমুখ! ঢেউ খেলানো সোনালি চুল। মঞ্চে দাঁড়ানো পরিণীতির হাসিমুখ ছড়িয়ে গেলো হাজারো ক্যামেরায়।
পরিণীতি বিক্ষিপ্ত দৃষ্টি ছড়িয়ে দিলেন এপাশে ওপাশে। দর্শকরা হাত বাড়িয়ে দিলো, বিনিময়ে পাওয়া গেলো তার হাসি। দর্শকদের হর্ষধ্বনির আড়ালে ততক্ষণে ঢাকা পড়েছে ভারি বাজনা।
পরিণীতি একবার হেঁটে স্থির হয়ে দাঁড়ালেন। হাতে তুলে নিলেন মাইক্রোফোন। বললেন, ‘হাই বাংলা’। একটু থামলেন, তারপর একটানা বলেই গেলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে এ দেশে এসে। যদিও খুব সামান্য সময়ের জন্য এসেছি। এতো অল্প সময়ে শহরকে ভালোভাবে চেনা সম্ভব নয়। তবু যতোক্ষণ আছি, ভালো লাগছে। একটা কথা আমাকে বলতেই হবে, এখানকার মানুষগুলো খুবই বন্ধুভাবাপন্ন। ’
২০ মিনিট ধরে পরিণীতি দাঁড়িয়ে থাকলেন মঞ্চে। মাঝে মধ্যে হাত নেড়ে দর্শকদের ভালোবাসার জবাব দিলেন। নেমে যাওয়ার আগে ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন ভবিষ্যতে আবারও এ দেশে আসার।
বাংলাদেশ সময় : ১২১৩ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৫
কেবিএন/জেএইচ