আলো-আঁধারী ব্যাকস্টেজে যারা আছেন, সবার পরনে শুভ্র পাঞ্জাবী। ও দলে মোশাররফ করিমও আছেন।
দু’জনেই আবেগে, স্মৃতিতে ভারাক্রান্ত। সেই কতোবছর আগেকার কথা! তারিক আনাম খানের হাত ধরে মোশাররফ করিমসহ একদল তরুণ শুরু করেছিলেন নাট্যকেন্দ্র। নতুন দল, নতুন প্রেরণা ও উদ্যম। রোববার (১১ অক্টোবর) নাট্যকেন্দ্র পার করেছে ২৫ বছর। সে উপলক্ষেই একসঙ্গে হয়েছিলেন সবাই।
২০০৩ সালে সর্বশেষ এ দলের ‘প্রতিসরণ’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন মোশাররফ। তারপর তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়লেন টিভি নাটকে। নাট্যকেন্দ্রের এ অভিনেতার নামডাক ছড়িয়ে পড়লো দেশজুড়ে, দেশের বাইরেও। মঞ্চে অভিনয় চালিয়ে যাওয়ার মতো অবসর পাননি মোশাররফ। একযুগ পর তিনি আবার হাজির হয়েছিলেন নাট্যকেন্দ্রের মিলনমেলায়। নাটক দেখলেন, শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন সবার সঙ্গে, স্মৃতি-আড্ডায় কাটলো একসন্ধ্যা। বহুদিন পর নাট্যকেন্দ্রের আয়োজনে ‘পিতা’র মতো তারিক আনাম খান জড়িয়ে ধরলেন মোশাররফ করিমকে। পিতা-ই বটে! মঞ্চনাটকে সময় দিতে না পারলেও, তারিক আনাম খানকেই অভিনয়ে অভিভাবক জ্ঞান করেন মোশাররফ। তাই এই আয়োজন নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাপিয়ে হয়ে ওঠে অগ্রজ-অনুজ শিল্পীদের মিলনমেলা।
মঞ্চ নাটকের দল নাট্যকেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়েছিলো ১৯৯০ সালের ১১ অক্টোবর। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর স্টুডিও থিয়েটার হলে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলো দলটি। নাট্যকেন্দ্রের পুরনো সদস্যরা, যারা দেশে ছিলেন, এসেছিলেন সবাই। সবাই একসঙ্গে মঞ্চে উঠেছেন, করেছেন স্মৃতিচারণা। এসেছিলেন জাহিদ হাসানও। ২০০২ সালে ‘বিচ্ছু’-ই ছিলো এ দলে অভিনীত তার শেষ নাটক।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের শুরুতে গাওয়া হয় রবীন্দ্রসংগীত ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’। ২৫ বছর আগে নাট্যকেন্দ্রের উদ্বোধনের সময় এ গানটিই গাওয়া হয়েছিলো। এরপর দলটির ‘হয়বদন’, ‘আরজচরিতামৃত’ ও ‘ডালিম কুমার’ থেকে গান গাওয়া হয়। বিশেষভাবে স্মরণ করা হয় প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদিকে। এরপর ‘গাধার হাট’ ও ‘বন্দুকযুদ্ধ’ নাটক দু’টির প্রদর্শনী হয়। এ দু’টি নাটকেরই নির্দেশনা দিয়েছেন তারিক আনাম খান।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৫
কেবিএন/এসও