তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাত বছর ধরে লক্ষ্য করেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতি ঈদে শুভেচ্ছা জানাতে যে কার্ড পাঠান, তাতে বিশেষ শিশুদের আঁকা ছবি থাকে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকার বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে অটিজম বক্তব্য নিয়ে নির্মিত সরকারি অনুদানের ছবি ‘পুত্র’র উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে তিনি একথা জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বিশেষ শিশুরা সমাজের বোঝা নয়, বরং সম্পদ। তাদেরকে লালন ও পরিচর্যা করার জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। এটাই আমাদের সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও মানবিক কর্তব্য। তাহলেই আমাদের দেশ সমাজ নির্মাণে সবাইকে দক্ষতার সঙ্গে কাজে লাগাতে সক্ষম হবে। ‘পুত্র’ ছবিটা দেখে বিশেষ শিশুদেরকে দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমরা উৎসাহিত হবো আশা করছি। ”
যোগ করে হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, ‘অটিজম এমন একটি বিষয় যা সম্পর্কে আমরা শুনেছি, জেনেছি কিন্তু বুঝি না। কোনো মানুষই কিন্তু পূর্ণাঙ্গ না, খুঁত আছেই। সক্ষম মানুষদেরও অক্ষমতা আছে। যেমন আমি গাইতে পারি না, ফলে আমাকে গান প্রতিবন্ধী বলতে পারেন। আমরা বুঝেছি, বিশেষ শিশুদেরও অনেক গুণ আছে। তাদের সক্ষমতা খুঁজে সেটা করতে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করাই পরিবারের কর্তব্য। দেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রত্যেকের গুণকে কাজে লাগালেই সমাজ এগোতে পারবে। ’
ছবিটির প্রদর্শনীতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ লিয়াকত আলী খান ও ছবিটির কাহিনিকার বিটিভির মহাপরিচালক হারুন রশীদ। অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার।
স্বাগত বক্তব্যে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, “সাধারণত তথ্যমন্ত্রী কিংবা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা শুধু অতিথি হিসেবেই চলচ্চিত্রের মহরত কিংবা প্রদর্শনীতে অংশ নেন। কিন্তু এ ছবির মূল প্রযোজক তারাই। দেশে যেসব প্রেক্ষাগৃহ রয়েছে, সেগুলোতে ‘পুত্র’ ভালোভাবে চালানো গেলে এতে যে মানবিক বক্তব্য আছে তা বেশিসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে। ”
এ ছবির গল্পে এক অটিস্টিক শিশুকে মিউজিক থেরাপির মাধ্যমে সম্পূর্ণ ভালো করে তোলার মতো একটি মহতি প্রচেষ্টাকে দেখানো হয়েছে। অটিজমের সঠিক ধারণা, অটিস্টিকদের সৃজনশীলতা এবং সামাজিক মূল্যবোধের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে শিগগিরই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ‘পুত্র’।
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের প্রযোজনায় এটি তৈরির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলো ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড। হারুন রশীদের কাহিনীতে এর চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন এবং পরিচালনা করেছেন সাইফুল ইসলাম মান্নু।
ছবিটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছে শিশুশিল্পী লাজিম। এ ছাড়াও আছেন ফেরদৌস, জয়া আহসান, আজিজুল হাকিম, শর্মিমালা, শেঁওতি, ডলি জহুর প্রমুখ। পর্দায় নিজের গাওয়া আইটেম গানে ঠোঁট মিলিয়েছেন কণ্ঠশিল্পী মেহরীন। ছবিটির সব গান সুর করেছেন সুজন আরিফ।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৬
জেএইচ