ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

বঙ্গবন্ধু আমার মাথায় হাত রেখে বলেছিলেন, তুই অনেক বড় হবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৮
বঙ্গবন্ধু আমার মাথায় হাত রেখে বলেছিলেন, তুই অনেক বড় হবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করছেন চিত্রনায়িকা ফরিদা আক্তার ববিতা। ছবি: পিআইডি

ঢাকাই চলচ্চিত্রের সোনালি যুগের চিত্রনায়িকা ফরিদা আক্তার ববিতা। দেশের চলচ্চিত্র শিল্পে অনন্য ও গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৬’ এ আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

রোববার (৮ জুলাই) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে কিংবদন্তি এই অভিনেত্রী পুরস্কার গ্রহণ করেন।

সম্মাননা গ্রহণের পর অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে ববিতা শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ চলচ্চিত্র নির্মাতা জহির রায়হান, কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায় ও সুভাষ দত্তকে স্মরণ করেন।

ববিতা বলেন, গভীর শ্রদ্ধায় মনে পড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে। যিনি স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে পরম পিতৃস্নেহে আমার মাথায় হাত রেখে বলেছিলেন, ‘তুই একদিন অনেক বড় হবি’। অতঃপর লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে ঘুরেছি প্রায় সারাবিশ্ব। ইতিহাসের মহানায়কের যোগ্য উত্তরাধিকার আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গভীর দূরদৃষ্টি, সংস্কৃতি ও শিল্প চেতনা এবং একান্ত সহযোগিতায় স্থবির ও মুখ থুবড়ে পড়া চলচ্চিত্র শিল্প আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

চলচ্চিত্র শিল্পে নিজের দায়বদ্ধতার কথা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, চলচ্চিত্র জীবনের প্রতিফলন, সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার। একজন শিল্পী হিসেবে আমার সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। চলচ্চিত্রে প্রতিফলিত হয় আমাদের যাপিত জীবনের বাঁকে বাঁকে না বলা গল্প, সামাজিক অবক্ষয়, মূল্যবোধের অভাব। এর মাঝেই সৃষ্টি হয় একজন শিল্পীর সামাজিক দায়বদ্ধতা। এই দায়বদ্ধতা থেকেই আমার অবিরাম পথচলা। জীবনের কাছে আমার আর কিছুই চাওয়ার নেই। শুধু আপনাদের ভালোবাসা। এই ভালোবাসা নিয়ে বারে বারে ফিরে আসবো ধানসিঁড়ি নদীর এই চির সবুজ বাংলায়।

রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রাপ্তিতে ‘অশনি সংকেত’খ্যাত এই অভিনেত্রী বলেন, আমার দুই বোন চম্পা ও সুচন্দা আপাসহ আমরা এক চলচ্চিত্র পরিবার। স্বর্ণালী কৈশোরের বেণি দুলানো দিনে শহীদ জহির রায়হানের হাত ধরে আমার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু। অতঃপর বিশাল এক সময় অতিক্রম করে দেশে-বিদেশে অনেক স্বীকৃতি ও পুরস্কার নিয়ে আজ আমি জীবনের গোধূলি প্রান্তে মুখোমুখি হয়ে আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত। আমাকে দেওয়া আজীবন সম্মাননা বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের জন্য। এই বিশেষত্ব আমার ভক্তদের জন্য উৎসর্গ করলাম।

নায়করাজ রাজ্জাকের স্মরণে ফিল্ম ইনস্টিটিউট বা আর্কাইভ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে ববিতা বলেন, বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদপুরুষ এবং আমার পরম শ্রদ্ধেয় নায়করাজ রাজ্জাক ভাই চলে গেছেন মহাকালের পথে। কিংবদন্তি এই শিল্পী যিনি স্বাধীনতা পদক, আজীবন সম্মাননা পুরস্কারসহ এ দেশের মানুষের একজন অতি আপনজন হয়ে উঠেছিলেন। প্রয়াত নায়করাজ রাজ্জাকের অবদান এবং স্মৃতি অমর করে রাখার জন্য রাজ্জাক ফিল্ম ইন্সটিটিউট অথবা বাংলাদেশ রাজ্জাক ফিল্ম আর্কাইভ নামকরণ করার জন্য আবেদন করছি।

এছাড়া চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য স্বল্পমূল্যে আবাসনের ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেদন জানান ববিতা।

এবার ববিতার সঙ্গে যৌথভাবে আজীবন সম্মাননা গ্রহণ করেছেন চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। এ প্রসঙ্গে ববিতা বলেন, ফারুক ভাই ও আমি একসঙ্গে অনেক সুন্দর সুন্দর চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি। যেগুলো এখনো বাংলাদেশে মাইলস্টোন হয়ে আছে। সেই স্মৃতিগুলো ভুলতে পারি না। ফারুক ভাইকে অভিনন্দন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৮
জেআইএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।