ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

বন্ধ হওয়ার পথে স্টার জলসা-জি বাংলা!

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৮
বন্ধ হওয়ার পথে স্টার জলসা-জি বাংলা! স্টার জলসা-জি বাংলার লোগো

ঢাকা: বকেয়া পরিশোধ না করায় কঠোর আন্দোলন শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গের টিভি নাটকের সঙ্গে যুক্ত অভিনয়শিল্পী ও কলা-কুশলীদের বিভিন্ন সংগঠন। এতে সবচেয়ে বেশি হুমকিতে রয়েছে জি-বাংলা ও স্টার জলসা। 

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বকেয়ার তালিকায় স্টার জলসা ও জি-বাংলার প্রযোজকরা এগিয়ে। আন্দোলনের মুখে এরই মধ্যে চ্যানেল দুটিতে প্রচারিত ধারাবাহিকগুলোর নতুন পর্বের শুটিং বন্ধ হয়ে গেছে।

 

ফলে নতুন পর্ব বাদ দিয়ে আগে প্রচার হওয়া সিরিয়াল বা নাটক দিয়েই টিকে রয়েছে জি-বাংলা ও স্টার জলসা। এ ধর্মঘট চলতে থাকলে চ্যানেল দুটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অভিনয় শিল্পী ও কলাকুশলীরা।  

জানা গেছে, এই মুহূর্তে নতুন কোনো প্রোডাকশন নেই জি-বাংলা ও স্টার জলসার। তাই আগের প্রোগ্রামগুলোই বারবার দেখানো হচ্ছে চ্যানেল দুটিতে।

এসব প্রোগ্রামের আগে টিভি স্ক্রিনে বলা হয়, ‘টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির ধর্মঘটের জেরে আপনাদের প্রিয় ধারাবাহিকের শুটিং এখন বন্ধ আছে। তাই আপনাদের প্রিয় ধারাবাহিকের নতুন পর্ব সম্প্রচার করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য দুঃখিত। শিগগিরই আপনারা প্রিয় ধারাবাহিকের নতুন পর্ব দেখতে পাবেন। সঙ্গে থাকুন। ’ 

গত ২০ আগস্ট থেকে বাংলা চ্যানেলগুলোতে সিরিয়ালের প্রচার শুরু হওয়ার আগে জনপ্রিয় শিল্পীদের দিয়ে এই ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। সেদিন থেকে ভারতের সব কটি বাংলা চ্যানেলে সিরিয়ালগুলোর কোনো নতুন পর্ব প্রচারিত হচ্ছে না। দেখানো হচ্ছে পুরোনো পর্বগুলো থেকে। কলকাতার টিভির আর্টিস্ট ফোরামের ধর্মঘটের কারণে এই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

গত ২০ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গে টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে ধর্মঘটের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। এর আগে ১৮ আগস্ট আন্দোলনে যান শিল্পী ও কলা-কুশলীরা।  

সংবাদ সম্মেলনে অভিনেতা প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি বলেন, কলা-কুশলীদের অনেক টাকা বকেয়া রয়েছে। ফেডারেশন এবং আর্টিস্ট ফোরাম এর মধ্যে গত ৭ জুলাই একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিলো। আর্টিস্ট ফোরামের পক্ষ থেকে আমরা অনুরোধ করেছিলাম- কাজটা শুরু হোক। কিন্তু পরে অনেকে বলেছেন-তারা ওই চুক্তি মানেন না।  

জি-বাংলায় প্রচারিত রানি রাশমণি।  ছবি: সংগৃহী তআর্টিস্ট ফোরামের পক্ষ থেকে অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, বেশ কিছু প্রযোজক শিল্পীর ন্যায্য পাওনা কেটে সেটি পরে জমা করছেন না। আমরা বকেয়া না পেলে আমরা কাজে যাবো না।  

স্বরূপ বিশ্বাস বলেন, ফেডারেশন ও আর্টিস্ট ফোরামের পক্ষ থেকে অনুরোধ করছি বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হোক। শুটিং বন্ধ হয়ে গেলে কোটি কোটি দর্শক হারাতে হবে। চ্যানেলও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।  

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও শঙ্কর চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
  
অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘট প্রত্যাহারে গত ১৯ আগস্ট আর্টিস্ট ফোরামের সদস্যরা ও প্রযোজকদের একাংশ বৈঠক করেন। তবে তাতেও কোনো সুরাহা হয়নি।  

শিল্পীদের একজন প্রতিনিধি বলেন, এখনও অচলাবস্থা কাটেনি। ফলে ধারাবাহিকের সম্প্রচার এখন প্রায় বন্ধের মুখে। আর্টিস্ট ফোরামের অভিযোগ, বেশ কিছু ধারাবাহিকের অভিনেতা ও কলা-কুশলীদের পারিশ্রমিক বকেয়া রয়েছে। তা না মেটানো পর্যন্ত শুটিংয়ে অংশ নেবেন না তারা।  

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে পারিশ্রমিক দেওয়ার কথা। কিন্তু বেশ কিছু হাউজ সে নিয়ম মানছে না।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) সকালে রাজ্যের তথ্য-সংস্কৃতি দপ্তর থেকে দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত টালিগঞ্জের টেকনিশিয়ানস স্টুডিওতে ওই বৈঠক হয়নি।  

এদিকে টিভি সিরিয়াল নিয়ে এ অচলাবস্থা নিরসনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তিনি ‘নবান্নে’ নিজ কার্যালয়ে হাজির হতে বলেছেন।

তবে এখানেই শেষ নয়, বৈঠকে কোনো মীমাংসা না হলে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৮/আপডেট: ১৪২৩ ঘণ্টা
বিএসকে/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।