ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

‘বুদ্ধিজীবীরা আমায় উপেক্ষা করেছিলেন, পাশে ছিলেন তারেক মাসুদ’

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫১ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২১
‘বুদ্ধিজীবীরা আমায় উপেক্ষা করেছিলেন, পাশে ছিলেন তারেক মাসুদ’ মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

প্রথমদিকে সিনেমা নির্মাণের সময় বুদ্ধিজীবীদের তোপের মুখে পড়েছিলেন বলে জানান বাংলাদেশের নন্দিত পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সেসময় তার পাশে প্রয়াত নন্দিত নির্মাতা তারেক মাসুদ ছিলেন বলেও স্মরণ করেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ফারুকী এমনটিই জানান।  

বিশ্বে বাংলা সিনেমার কদর কমছে। অথচ আমেরিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া, ফারুকীর কাজের চর্চা হচ্ছে… এমন কথার প্রসঙ্গে এই নির্মাতা বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশের মানুষ আমার সিনেমা নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন এমন নয়। আমার প্রথম সিনেমা ‘ব্যাচেলর’ থেকে এখনও অবধি দেখেছি, মুক্তির সময় বাংলাদেশের দর্শক দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায়। এর কারণ, প্রায় প্রত্যেক সিনেমাতেই আমি নিজেকে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ছুড়ে দিই। ফলে প্রত্যেকটা সিনেমাই দর্শকের কাছে একটা আলাদা জার্নি হয়ে দাঁড়ায়। একদল মানুষ যারা পুরনো থার্মোমিটারে আমাকে মাপতে চান, তারা এর বিপক্ষে বলতে শুরু করেন। আরেক দল, যারা সব সময়েই নতুন রাস্তার যাত্রী হতে চান, তারা এর পক্ষে বলতে শুরু করেন। আর এই পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনার মধ্যে দিয়ে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের সিনেমা নতুন বাকে এগোতে থাকে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম দিকে সিনেমা তৈরির কাজে হাত দিলে বাংলাদেশের মানুষ আমার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন। তারা বলেছিলেন, আমি সব ভেঙেচুরে নষ্ট করে দিচ্ছি। ওই সময় তারেক মাসুদ একমাত্র মানুষ যিনি বুদ্ধিজীবীদের ‘ডার্লিং’ হয়েও বাংলাদেশের এক পত্রিকায় আমাকে না জানিয়ে বিশদে লিখেছিলেন। তিনি দেখিয়েছিলেন আমার বিরুদ্ধে বুদ্ধিজীবীরা যে অভিযোগ আনছেন সেটা বিশ্ব চলচ্চিত্রের নিরিখে কতটা ভুল। উনি সে দিন আমার পাশে ছিলেন। ’ 

বুদ্ধিজীবীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে ‘টেলিভিশন’খ্যাত এই নির্মাতা বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা আমায় উপেক্ষা করেছিলেন। বলেছিলেন কী সব বিষয় নিয়ে আমি কাজ করি! জঘন্য। তাতেও আমি কাজ বন্ধ করছি না দেখে আমায় গালিগালাজ করতে আরম্ভ করেছিলেন। তাদের একটা যুক্তি ছিল, আমি বাংলা ভাষাকে শেষ করে দিচ্ছি। যদিও এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমরা প্রাত্যহিক জীবনে যে ভাষা ব্যবহার করি তা বড় পর্দায় তখন ব্যবহৃত হতে কম দেখেছি। আমার সিনেমাতে ওই ভাষাই ব্যবহার করেছিলাম। এটায় তাদের ঝটকা লাগে। সিনেমায় যে চরিত্র যে ভাষা বলে, তাকে তো সেই ভাষাই বলাতে হবে। আমি কুলির গায়ে তো শার্ট প্যান্ট পরাতে পারব না। ’

সম্প্রতি জি ফাইভে মুক্তি পেয়েছে ফারুকীর ওয়েব সিরিজ, ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান’। সিরিজটির মূল দুইটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফজাল হোসেন ও তাসনিয়া ফারিণ। এছাড়া আরও রয়েছেন- মামুনুর রশীদ, হাসান মাসুদ, পার্থ বড়ুয়া, ইরেশ যাকের, মারিয়া নূর, মোস্তফা মনোয়ার এবং চঞ্চল চৌধুরী প্রমুখ।

এছাড়া ফারুকীর প্রথম আন্তর্জাতিক সিনেমা ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। বাংলাদেশের সেন্সর বোর্ড থেকে ২০১৯ সালের শুরুর দিকে নিষিদ্ধ হয় তার পরিচালিত ‘শনিবার বিকেল’ বা ‘স্যাটারডে আফটারনুন’সিনেমাটি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২১
জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।