স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বারকে হারানোর পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট)। ২০১৭ সালের আজকের ইএ দিনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী।
১৯৩৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন আবদুল জব্বার। ওস্তাদ ওসমান গনি এবং ওস্তাদ লুৎফুল হকের কাছে গানের তালিম নিয়েছেন তিনি। ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে তালিকাভুক্ত এবং ১৯৬২ সালে সিনেমায় প্লেব্যাকে যাত্রা শুরু হয় তার।
১৯৬৪ সাল থেকে বিটিভিতে নিয়মিত গান শুরু করেন আব্দুল জব্বার। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ডাক এলে তিনি গানকেই করেছিলেন মুক্তির হাতিয়ার। অস্ত্র দিয়ে নয় তিনি পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন দরাজ কণ্ঠে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে তার গান মুক্তিযোদ্ধাদের জুগিয়েছে সাহস আর অনুপ্রেরণা।
আব্দুল জব্বার সঙ্গীত জীবনে শুধু দেশের গানই নয় আধুনিকের পাশাপাশি কণ্ঠ দিয়েছেন অসংখ্য প্লেব্যাকে। আমৃত্যু সুর-সাধনায় মগ্ন ছিলেন তিনি। তাইতো তার গাওয়া গানগুলো আজও ফেরে মানুষের মুখে মুখে। যার কারণে সময়-কাল ছাপিয়ে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের হৃদয়ের উচ্চাসনেই রয়ে যাবেন তিনি।
আব্দুল জব্বারের গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গান তিনটি ২০০৬ সালে বিবিসি বাংলার শ্রোতাদের বিচারে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় জায়গা করে নেয়।
তার অন্যান্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘ওরে নীল দরিয়া’, ‘পিচ ঢালা এই পথটারে ভালোবেসেছি’, ‘এক বুক জ্বালা নিয়ে’, ‘বন্ধু তুমি শত্রু তুমি’, ‘বিদায় দাও গো বন্ধু তোমরা’, ‘তুমি আছো সবই আছে’, ‘তারা ভরা রাতে’, ‘আমি তো বন্ধু মাতাল নই’, ‘সুচরিতা যেও নাকো, আর কিছুক্ষণ থাকো’।
আব্দুল জব্বার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। এরমধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক (১৯৭৩), একুশে পদক (১৯৮০), স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৯৬), বাচসাস পুরস্কার (২০০৩), সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস-আজীবন সম্মাননা (২০১১) ও জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কার।
বাংলাদেশ সময়: ১২০১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২২
জেআইএম