ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যুতে কুমিল্লায় শোকের ছায়া

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যুতে কুমিল্লায় শোকের ছায়া

কুমিল্লা: দেশবরেণ্য গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যুতে কুমিল্লার সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ সকল স্তরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ফেসবুকে শোকগাথা প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরা।

পাশাপাশি শক্তিমান এই সাধক পুরুষের সঠিক মূল্যায়ন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল হাসনাত বাবুল বলেন, ‘কুমিল্লার সন্তান গাজী মাজহারুল আনোয়ার বিরল প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তার সঙ্গে আমার বহু স্মৃতি। তার শ্বশুর ছিলেন কুমিল্লার দীপিকা সিনেমা হলের স্বত্বাধিকারী। সেখানে ১৯৭২ সালে তার আর জোহরা কাজীর বিয়ে সম্পন্ন হয়। ওই সময় নায়করাজ রাজ্জাকসহ ১০০-১৫০ জন চিত্রতারকা বরযাত্রী হয়ে আসেন। ঢাকায় স্থায়ী হওয়ার পরও তিনি কুমিল্লায় নিয়মিত আসতেন। তিনি একুশে পদক পাওয়ার পর কুমিল্লা ক্লাবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ব্যক্তিজীবনে অত্যন্ত সৎ, ধার্মিক ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে আমরা কুমিল্লাবাসী গভীর শোকাহত।

কুমিল্লার বাসিন্দা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক ম্যানেজার বদরুল হুদা জেনু বলেন, ‘গাজী মাজহারুল আনোয়ার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি কুমিল্লা ক্লাবের সদস্য। মেডিক্যালে তৃতীয় বর্ষ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এর আগেই সংগীতাঙ্গনে দাপট দেখাতে শুরু করেন মাজহার। সর্বকালের সেরা ১০টি বাংলা গানের মধ্যে  কালজয়ী এই গুণী সাধক পুরুষের লেখা গান তিনটি। আমি মনে করি, তিন রাজনৈতিক দ্বিচারিতার শিকার হয়েছেন। গুণীর মূল্যায়ন হওয়ার কথা ছিল গুণের বিচারে, রাজনৈতিক বিচারে নয়।  

কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য গবেষক আহসানুল কবির বলেন, ‘‘গাজী মাজহারুল আনোয়ারের বাবা কুমিল্লা শার্মা কেমিক্যালের একজন সম্মানিত পরিচালক ছিলেন। তাদের নিজস্ব ঔষধ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ছিল। ঠাকুরপাড়া বেঙ্গল ড্রাগসের সঙ্গে উনাদের পরিবারের সম্পৃক্ততা ছিল। অধুনালুপ্ত দীপিকা সিনেমা হল, এখন যেখানে রূপায়ণ শপিং মল নির্মাণ করা হয়েছে- এখানেই ছিল তার শ্বশুর মরহুম বেলায়েত হোসেনের নিবাস। জোহরা গাজী এই বাড়িতেই বড় হয়েছেন। সঙ্গীতের সকল শাখায় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের অবাধ বিচরণ। তিনি ইতিহাসে অমর। মানুষের কণ্ঠে তিনি থাকবেন হাজার বছর। তিনি থাকবেন বাংলার পথে প্রান্তরে আর ছোট্ট সোনার গাঁয়ে, ‘যেথায় কোকিল ডাকে কুহু, দোয়েল ডাকে মুহু মুহু, নদী যেথায় ছুটে চলে আপন ঠিকানায়’। গাজী মাজহারুল আনোয়ার থাকবেন গ্রাম বাংলার ফসলের মৌ মৌ গন্ধে। আল্লাহপাকের নিকট তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। নিশ্চয় তিনি ক্ষমা পাবেন। ’’ 

গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। রোববার (০৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে ঢাকার একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২
জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।