ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

অদ্ভুত গাছ বাওবাব

আসিফ আজিজ, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৩
অদ্ভুত গাছ বাওবাব

ঢাকা: মূলত ভারত ও আফ্রিকার মরু অঞ্চলের এক আজব গাছ বাওবাব। মরু অঞ্চলের বৃক্ষহীন স্থানেই এরা বেশি জন্মে।

তবে অন্য কিছু এলাকতেও এদের দেখা মেলে।

গাছটি দেখতেই অদ্ভুত প্রকৃতির। গোড়া প্রকাণ্ড ড্রামের মতো গোল। বেশ মোটাও। গোড়ার বেড় হয় নয় মিটার বা তার বেশি।
manual-22
একহারা গড়নের গাছটির কাণ্ড মাটি থেকে বিশাল আকারের লম্বা হয়ে সোজা উপরের দিকে উঠে গেছে। একেবারে মাথায় ঝোপঝাড়ের মতো কিছু ডালপালা ছড়ানো। দেখে মনে হয় ছাতার মতো।

 তবে পাতাগুলো এমন যে দূর থেকে দেখে কেউ ভুল করে ভাবতে পারে গোড়া থেকে গাছটিকে উপড়ে নিয়ে মাথার দিকটা মাটিতে পুতে ফেলা হয়েছে এবং গাছের শিকড়বাকড়গুলো উপরের দিকে ছড়ানো।

তবে বছরের বারো মাসের মধ্যে নয় মাসই এ গাছে কোনো পাতা থাকে না। তখন একে অনেকটা মরা গাছের মতো দেখায়।

মরু অঞ্চলের গাছ বলে খুব কম পানিতেই এর প্রয়োজন মিটে যায়। বর্ষাকালে এ গাছ তার দীর্ঘ কাণ্ডের মধ্যে পানি জমিয়ে রাখে। সবচেয়ে অবাক বিষয় হলো, এই গাছ কয়েক হাজার বছর বেঁচে থাকে!

বাওবাব গাছের ফলও খুব মজার। দেখতে লাউয়ের মতো। আবার ওপরটা শুকনো। এই ফলগুলো বানরের খুব প্রিয় খাদ্য। বানররা ফলগুলো কামড়ে কামড়ে রুটির মতো চিবিয়ে খায়। তাই কেউ কেউ এই আজব গাছগুলোকে বাদররুটি গাছও বলে!
manual-420
শুধু ফল নয়, এই গাছের গোটা অংশই মজার। বাকল হয় খুব পুরু। বাকল থেকে বের হয় শক্ত ও লম্বা আঁশ। যা দিয়ে তৈরি করা যায় রশি এবং কাপড়। এদের কাণ্ড ঢাঁউশ মোটা হলে কি হবে, কাঠ খুবই নরম ও হালকা। তাই যে কোনো জীব জন্তু বা পাখি অনায়াসে ঠুঁকরে গর্ত করে ফেলতে পারে। তৈরি করতে পারে রাস্তা। অনেক সময় মানুষও এদের গোড়ায় গর্ত করে মজার বিশ্রামাগার তৈরি করতে পারে।

বাওবাব গাছ নিয়ে আছে একটি মজার গল্প। বাওবাব গাছের আদি নিবাস নাকি ছিল স্বর্গে। একদিন এই গাছটির দিকে কুনজর পড়লো শয়তানের। শয়তানের মাথায় চাপলো বদ খেয়াল। তখন সে গাছটিকে উপড়ে ফেললো স্বর্গের মাটি থেকে। তারপর গাছের ডাল-পালাগুলোকে ফেলে দিলো পৃথিবীর মাটিতে আর শেকড়গুলোকে ছড়িয়ে দিলো বাতাসে।

অর্থাৎ শয়তান গাছটিকে স্বর্গ থেকে পৃথিবীর মাটিতে এনে উল্টো করে লাগিয়ে দিলো। শিকড় রইলো আকাশে আর ডালা গেল মাটির নিচে। আসলে গাছটিকে দেখলেও এমনটাই মনে হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৩
এএ/আরকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।