ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

নির্বিচারে রেণু পোনা নিধন চলছে নোয়াখালীর মেঘনায়

শাহেদুল ইসলাম শফিক, হাতিয়া প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১১
নির্বিচারে রেণু পোনা নিধন চলছে নোয়াখালীর মেঘনায়

হাতিয়া (নোয়াখালী): নিষিদ্ধ মশারি জাল দিয়ে নোয়াখালীর উপকূলীয় মেঘনায় চলছে রেণু পোনা নিধন। অতি ক্ষুদ্র ফাঁসের এ জাল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না মাছের ডিমসহ রেণু পোনা।



মশারি জাল দিয়ে বাগদা পোনা নিধনের ফলে মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র নামে পরিচিত নোয়াখালীর উপকূূলীয় মেঘনার মৎস্য সম্পদ ও এর জীব বৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে।

প্রতি বছর এ অঞ্চল থেকে নিষিদ্ধ মশারি জাল দিয়ে পোনা সংগ্রহ করে থাকে এলাকার শিক্ষা বঞ্চিত নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা।

উপজেলা মৎস্য অফিসের ফিল্ড অফিসার নিজাম উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে মশারি জাল দিয়ে ১টি বাগদা পোনা সংগ্রহ করতে এদের জালে নষ্ট হয় আরো অন্তত ৯২ প্রজাতির মাছের পোনা ও জুপ্লাঙ্কটন।

তিনি জানান, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে পরবর্তী বছরের জুন পর্যন্ত বাগদা ও অন্যান্য প্রজাতির চিংড়ির পোনা ছাড়ার উপযুক্ত সময়।

সরেজমিন দেখা গেছে, দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া ছাড়াও জেলার অন্যান্য উপজেলা থেকে আসা জেলেরা এখানে অস্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেছেন। এদের হাত থেকে মৎস্য সম্পদ রক্ষা করার জন্য সরকারের নির্দেশনা থাকলেও স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ, জাহাজমারা, মোকতাইরার খাল, সোনাদিয়া, তমরুদ্দিন, বাংলা বাজার, রহমত বাজার, বয়ারচর, ক্যারিংচর, নলেরচর, ঢালচর, জাগলারচর, মণপুরা ও সুবর্ণচর উপজেলাসহ উপকূল সংলগ্ন মেঘনার মোহনায় এখন অসংখ্য নারী, শিশুসহ জেলেরা মশারি জাল দিয়ে বাগদা পোনা আহরণ করছে।

চরচেঙ্গা ঘাটের বাগদা আহরণকারী জেলে আমির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘হাতিয়া উপকূল থেকে ধরা বাগদা পোনা খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি হয়। খুলনার আড়ৎদাররা ইতোমধ্যেই বগদা পোনা সংগ্রহ করার জন্য হাতিয়ায় আসতে শুরু করেছেন। ’

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারুক ময়েদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ‘হাতিয়া উপকূলীয় মেঘনায় বাগদা, গলদা, চাকা, চাপদা, কাঠালিয়া, হরিণ, বাঘাতার ভিনুয়া, ঘুসা, মটকা, বসনাই, ও ছটকাসহ নানান প্রজাতির চিংড়ির পোনা রয়েছে। তবে মশারি জাল দিয়ে মাছ শিকার করায় বহু প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। ’

তিনি আরো জানান, ইলিশ প্রজননের কেন্দ্রও এটি। তাই ইলিশের পাশাপাশি পাঙ্গাস, টেংরা, মাগুর, দাতিনা, মেদ, ভেটকি, কাইন, ভাঙ্গল, চেনা, পোয়া, চিনা, ঢেলা ছাড়াও এ অঞ্চলে রয়েছে কয়েক প্রজাতির মাছ।

সাগর থেকে জেলেরো নির্বিচারে বাগদা পোনা সংগ্রহের পর উচ্ছিষ্টগুলো (অন্যান্য মাছের পোনা) উপরে ফেলে দেওয়ায় সে গুলো মরে যায়। এর ফলে দেশের সমুদ্র থেকে বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়িসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ কমে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।