ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

দুর্গম অরণ্যে উদয়ী বামন মাছরাঙার বাস

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২
দুর্গম অরণ্যে উদয়ী বামন মাছরাঙার বাস আদমপুর জঙ্গলের দুর্গম এলাকায় উদয়ী বামন মাছরাঙা, ছবি: ডা. এসএস আল আমিন সুমন

হবিগঞ্জ: উদয়ী বামন মাছরাঙা (Oriental Dwarf Kingfisher)। এটি অদ্ভুত সুন্দর একটি পাখি।

এরা আকারে চড়ুই পাখির মতো। নীলচে ডানা এবং লালচে দেহ হয় এদের। মাথা, মাথার চাঁদি, ঘাড় ও পেট কমলা রঙের হয়ে থাকে। ডানার পালক কালচে নীল, গলা সাদা। মাছরাঙা প্রজাতির মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট এবং বিরল প্রজাতির মাছরাঙা এটি।

বাংলাদেশে খুবই কম দেখা মেলে এদের। বর্তমানে কুলাউড়ার আদমপুর জঙ্গলের দুর্গম এলাকায় এদের একটি পরিবার পাওয়া গেছে। বাংলাদেশের বৃহত্তম ফটোগ্রাফি গ্রুপের অ্যাডমিন এবং হবিগঞ্জের দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. এসএস আল আমিন সুমন খবর পেয়ে সেই দুর্গম জঙ্গল থেকে পাখিটির ছবি সংগ্রহ করেছেন। তিনি বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য পাখি পরিবারটির দু’টি ছবি সরবরাহ করেছেন।
 
ডা. সুমন বাংলানিউজকে বলেন, এটি প্রাচ্যের বামন কিংফিশার অথবা তিন পায়ের কিংফিশার নামে পরিচিত আলসেডিনিডে পরিবারের একটি পকেট আকারের পাখি। এরা ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ এলাকাজুড়ে নিম্নভূমির বনে সাধারণত জলাশয় বা পুকুরের কাছাকাছি বাস করে। সেখানে পোকামাকড়, মাকড়সা, কীট, কাঁকড়া, মাছ, ব্যাঙ, এবং টিকটিকি খেয়ে থাকে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভুটান, ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙাপুর, শ্রীলঙ্কা এবং ভিয়েতনামে এদের পাওয়া যায়।
 
ছোট্ট এ মাছরাঙার ছবিটি তুলতে দীর্ঘ পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করে ডা. সুমন বলেন, আদমপুর জঙ্গলের দুর্গম এলাকায় উদয়ী বামন মাছরাঙার বসবাসের খবর পেয়ে ২৭ আগস্ট সেখানে গিয়েছিলাম। দু’টি ছবি তুলতে পাঁচ ঘণ্টা লেগেছে। মাছরাঙাটি এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি করছিল। হঠাৎ জলের ধারে আসছিল, আবার চলে যাচ্ছিল। তার গতিবিধি লক্ষ্য করতে আমাকেও অসংখ্যবার জায়গা পরিবর্তন করতে হয়েছে। পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় অবশেষে ছবিটি তুলতে পেরেছি।
তিনি বলেন, উদয়ী বামন মাছরাঙা প্রজননের সময় তিন থেকে সাতটি ডিম দিয়ে থাকে। একদিনের ব্যবধানেই এ ডিমগুলো পাড়ে। ডিমে তা দেওয়ার সময়কাল ১৭-১৮ দিন। তবে এ সময় স্ত্রীদের ভূমিকা বেশি থাকে, কারণ সে রাতে ডিম ফোটানোর দায়িত্বে থাকে। ডিম থেকে বের হওয়ার ১৮ থেকে ২০ দিন পর ছানার পালক গজায়। এ সময়কালের পর সাধারণত ভোরবেলা ছানাগুলো বাসা থেকে বের হতে শুরু করে।
  
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২২
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।