ঢাকা: ঝুম বর্ষা কিংবা হিমশীতল আবহাওয়ায় জুড়ি নেই খিচুড়ির। সঙ্গে যদি হয় খাসির ঝাল মাংস, আর সেই খিচুড়ি যদি হয় পুরান ঢাকার শমশের আলীর ভুনা খিচুড়ি, তবে তো সোনায় সোহাগা।
পুরান ঢাকার প্রতিটি খাবারে রয়েছে ঐতিহ্যের ছোঁয়া। ফাস্টফুড, জাঙ্কফুডের ভিড়ে অনেক খাবার বিলুপ্ত হলেও এখনো রয়েছে, পোলাও, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, কাবার, পুরির স্বতন্ত্র স্বাদের কিছু খাবার। কোনোটি হয়তো পুরনো নামে আবার কোনো পুরনো খাবার হয়তো নতুন নামে ধরে রেখেছে এর অস্তিত্ব।
হাজির বিরিয়ানি, নান্নার বিরিয়ানির মতো যুগের পরিবর্তনে খিচুড়িও নতুন নামে পরিচিত হয়েছে। শমশের আলীর ভুনা খিচুড়ি তার একটি।
পুরান ঢাকার বংশালে অবস্থিত শমশের আলীর ভুনা খিচুড়ি। ভোজন রসিকদের কাছে খুব জনপ্রিয় একটি খাবার। পুরান ঢাকার জনপ্রিয় ও সুস্বাদু খিচুড়ির স্বাদ যদি কেউ নিতে চান তাহলে অবশ্যই একবার শমশের আলীর ভুনা খিচুড়ি রেস্তোরাঁ থেকে ঘুরে আসা উচিত।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার শমশের আলী (৪৫) নিজে এই খিচুড়ি রান্না করেন।
অন্য খিচুড়ি থেকে এই খিচুড়ির বিশেষত্ব কি- জানতে চাইলে তিনি বলেন, খিচুড়ি অনেক দোকানে অনেকভাবে হয়। কিন্তু আমি একটু ভিন্নভাবে এই খিচুড়ি তৈরির চেষ্টা করি। মোঘল আমলে এই খিচুড়ি যেসব প্রণালীতে তৈরি করা হতো আমি ঠিক ওই প্রণালীগুলো জেনে সম্পূর্ণ দেশীয় সব মশলায় তৈরি করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমার বংশের অনেকেই এই ঐহিত্যবাহী খাবার তৈরি করতো। এখন আমি নিজেও এই খাবার তৈরি করছি।
শমশের আলীর ভুনা খিচুড়িতে দেশীয় চিনি গুড়া পোলাও চাল ব্যবহার করা হয়। ভিন্ন স্বাদ এনে দেয় এ চাল। তাছাড়া দেশি খাসির মাংস ও মশলা ব্যবহার করায় খিচুড়ি হয়ে ওঠে দ্বিগুণ স্বাদী।
শমশের আলীর রেস্তোরাঁয় শুধুই খিচুড়ি পাওয়া যায়। ভুনা খিচুড়ি প্রতি হাফ প্লেট ১২০ টাকা আর ফুল ২৪০ টাকা করে। খাসির লেগ পিস খিচুড়ি ১৫০ টাকা করে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এ রোস্তোরাঁ খোলা থাকে।
যেভাবে যাবেন
যদি শমশের আলীর ভুনা খিচুড়ি খেতে যেতে চান তাহলে গুলিস্তান হয়ে বাসযোগে বংশাল যেতে পারেন। বংশাল নেমে শমশের আলীর ভুনা খিচুড়ির দোকান কোথায় স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞেস করলে তারা আপনাকে সহযোগিতা করবে।
অথবা শাহবাগ, টিএসসি, পালাশীর মোড় এবং আজিমপুর থেকে রিকশা নিয়ে বংশাল চলে যেতে পারেন। এতে আপনার রিকশা ভাড়া খরচ পড়তে পারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ০৩১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৫