ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

হুমায়ূনের নামে অবশ্যই ক্যান্সার হাসপাতাল হবে

সজিব তৌহিদ, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৫
হুমায়ূনের নামে অবশ্যই ক্যান্সার হাসপাতাল হবে

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ২৩ বছরের টগবগে এক তরুণ একাত্তরের বিভীষিকা দেখেছেন। পুলিশ অফিসার বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়ার পর গোটা পরিবারসহ পড়েছেন অকূল দরিয়ায়।



পরিবারের বড় ছেলে, তাই গুরুদায়িত্ব কাঁধে এসে পড়ায় মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়া না হলেও, জীবনযুদ্ধ তাকে চালিয়ে যেতে হয়েছে আমৃত্যু। এক পর্যায়ে উন্নত জীবন-যাপনের জন্য বিদেশে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ থাকলেও, তিনি থোড়াই কেয়ার করেছেন।

বাবার মৃত্যুর পর চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে কাটানো পরিবারের ছেলেটি এক সময় নাম, যশ, খ্যাতি ঐশ্বর্য, প্রতিপত্তি সবই অর্জন করেন। যখন যাতে হাত দিচ্ছেন তাতেই সোনা ফলছে, ঠিক তখনই তার দেহে ধরা পড়ে ক্লোন ক্যান্সার।

দেশে ক্যান্সারের উন্নত চিকিৎসা না থাকায় তাকে ধর্না দিতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এজন্য দেশের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে, ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের জন্য উন্নত চিকিৎসা সুবিধার একটি ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার মনস্থির করেন তিনি।

কিন্তু দিনগুলো তার সোনার খাঁচায় রইলো না। লেখকের প্রিয় ‘চান্নি পসর’ রাত না থাকলেও, নিউইর্য়কে সেদিন মরণ তাকে ছাড়েনি।

২০১২ সালের ১৯ জুলাই বিশ্বের ২৫ কোটি বাংলা ভাষাভাষী মানুষ তার মৃত্যুতে শোকসাগরে ভেসেছে।

বলা হচ্ছে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের কথা। ১৩ নভেম্বর (শুক্রবার) জনপ্রিয় এ লেখকের ৬৭তম জন্মদিন। হুমায়ূনের মৃত্যুর পর তার ভক্তরা চতুর্থবারের মতো জন্মদিন উদযাপন করছেন।

প্রখ্যাত এ চলচ্চিত্র নির্মাতার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য দেশবাসীর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। হুমায়ূনের স্বপ্নের ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপনে সবাইকে উদাত্ত আহ্বানও জানান তিনি।

হুমায়ূন মারা যাওয়ার পর তিন বছর কেটে গেছে। সারা দেশে হুমায়ূনভক্ত হিমুরা আরও একটি জন্মদিন উদযাপন করছেন।

শাওনের কাছে স্বপ্নের সেই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, অগ্রগতি খুব একটা হয়নি। আসলে আমার একার প্রচেষ্টায় তো  হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। দেশের সবার সহযোগিতা ও হুমায়ূন আহমেদের ভক্তদের নিয়ে এ কাজটি করতে হবে। তবে আমি খুব, খুব, খুব বেশি আশাবাদী, এদেশে অবশ্যই, অবশ্যই হুমায়ূনের নামে ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হবে।

শাওন বলেন, আমার দুই ছেলে নিষাদ, নিনিত স্কুলে যায়। দু’জনের পড়ালেখা ও স্কুলে নিয়ে যাওয়া-আসা এবং ওদের দেখভাল করতেই অনেক সময় চলে যায়। তাছাড়া শুটিং ও পরিচালনা নিয়েও আমাকে ভীষণ ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই সেইভাবে হাসপাতাল নির্মাণের অগ্রগতি সেভাবে হয়নি।

তিনি বলেন, আমি একটু গুছিয়ে নিই। এরপর ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করবো। তখন এদেশের সবাইকে আমাকে সহয়োগিতা করতে হবে, আমার পাশে এসে দাঁড়াতে হবে। কেননা এতো বড় কাজ সবার প্রচেষ্টা ছাড়া কোনোভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

হাসপাতাল নির্মাণ কাজে হুমায়ূন আহমেদের ভক্ত, পাঠক ও দেশবাসী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন শাওন।

বাংলাদেশ সময়: ০০২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৫
টিআই/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।