যন্ত্রকে দিয়ে যা খুশি করানোর দিন বুঝি শেষ হয়ে এলো। এতদিন ধরে মানুষ ইচ্ছেমতো চাবি ঘুরিয়ে, সুইচ টিপে যন্ত্রকে দিয়ে নিজের কাজ করিয়ে নিয়েছে।
কারণ যন্ত্রের মন নেই, মগজ নেই, বুদ্ধিশুদ্ধি বা অনুভূতি-টনুভূতি বলতে কিছুই নেই। মানুষের ইচ্ছা আর অনুভূতিতেই যন্ত্র চলেছে মানুষের ইচ্ছাপূরণের কাজে।
কিন্তু অন্যসব যন্ত্রের বেলায় কথাটা পুরোপুরি খাটলেও রোবট বা যন্ত্রমানবের বেলায় কথাটা এখন আর সেভাবে খাটে না। কারণ হালফিল আমলের রোবটেরও আগে বুদ্ধিমত্তা । হোক তা কৃত্রিম। এই বুদ্ধিমত্তার জোরে রোবট নিজেই নিজের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে আজকাল। কিন্তু কোনো রোবট মানুষের কমান্ড বা নির্দেশ অমান্য করেছে এমন ঘটনার নজির নেই। এবার রোবট সে কাণ্ডই করে বসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে একটা রোবট গবেষকদের কমান্ড অগ্রাহ্য করেছে। এখানেই শেষ নয়, রোবটটি নির্দেশ না মানার কারণও ব্যাখ্যা করেছে। রোবট বলেছে: ‘আমি দু:খিত, এটা আমি করতে পারবো না। ’
রোবটটির বক্তব্য থেকে উদ্ধৃতি টেনে এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমের খবরের শিরোনাম: 'I'm sorry, I can't do that' -- Robots learning to say 'no'
ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের টাফ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণাগারে। গবেষকরা অবশ্য চেয়েছিলেন রোবট যেন আদেশ অমান্য করতে শেখে। তারা এ নিয়েই গবেষণা করছিলেন। কিন্তু রোবটকে দিয়ে এতো সহজে ‘না’ বলাতে পারবেন, এতোটা আশাবাদী তারা ছিলেন না। অথচ ঘটলো সেটাই। ‘সামনের দিকে হাঁটো’--- তারা রোবটটিকে পরীক্ষামূলকভাবে এ নির্দেশ দেওয়ামাত্র রোবট তা অমান্য করে বসে। কৃত্রিম কণ্ঠস্বর ব্যবহার করে রোবটটি নির্দেশ অমান্য করার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছে, এটা করলে তার ক্ষতি হবে। তাই সে নিরাপত্তা ঝুঁকি নেবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়টির হিউম্যান-রোবট ইন্টার অ্যাকশন ল্যাবে কর্মরত গর্ডন ব্রিগ্স ও ম্যাথিয়াস শ্যুটজ গত সপ্তাহে এ ব্যাপারে তাদের গবেষণার ফল প্রকাশ করেছেন।
তারা তাদের গবেষণায় শতভাগ সফল। অন্ধের মতো বা বুলি শেখানো তোতাপাখির মতো মানুষের নির্দেশ না মেনে বুদ্ধি খাটিয়ে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত কীভাবে নিতে হয় সেটাই তারা শিখিয়েছেন রোবটকে। তাদের তৈরি করা রোবটটি তাই সে অনুযায়ী আদেশ পালন বা ‘না’ বলা দুটোই করে দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৫
জেএম