ঢাকা: রাজধানীর আগারগাঁও সিগন্যাল এলাকায় বাংলাদেশ এয়ার ফোর্সের ত্রিভুজ আকৃতির একখণ্ড জমি। এর একপাশে বাংলাদেশ এয়ার ফোর্সের সীমানা প্রাচীর।
পিচঢালা এ দুই সড়কের মাঝখানে বাংলাদেশ এয়ার ফোর্সের ছয় বিঘা জমিতে গড়ে উঠেছে সবুজ বাংলা নার্সারি। নগরীর সড়কের মাঝখানে এতো সবুজের দেখা মেলা ভার। এখানে রয়েছে অসংখ্য প্রজাতির ফুল, ফল ও মসলা জাতীয় গাছ। ব্যস্ত নগরীতে এটি যেন এক সবুজের প্রলেপ।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক ‘গ্রিন ঢাকা’ বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। গ্রিন ঢাকা বাস্তবায়নে নার্সারিটি সহায়ক ভূমিকা পালন করছে বলে জানান স্থানীয়রা।
নার্সারিতে রয়েছে কসমস, জিনিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, সূর্যমুখী, ডালিয়া, বাগান বিলাস, পানচাটিয়া, গন্ধরাজ, জুঁই, হাসনাহেনা, নয়নতারা, রক্তজবা বা ঝুমকো জবা, কাঞ্চন, পুন্নাগ, কাঠ মালতী, মালতী লতা, ব্রহ্ম কমলসহ নানা ফুলের বাহার।
এছাড়া আছে নীলকণ্ঠ, রুদ্র পলাশ, রামসর, দোলনচাঁপা, শারঙ্গ, সর্পগন্ধা, বনজাঈ, নীলমনি লতা, অনন্ত লতা, কাঠগোলাপ, নাগকেশর, সজনা, আকন্দ, কুটজ, বরুণ, ফুরুস, কাঞ্চন, সেনালু, দোপাটি, জারুল, অপরাজিতা, যুথিকা, অশোক, কাঠালী চাঁপা, সর্বজায়া, কলাবতী, নার্গিস, রূপসী ও কদমের মতো ফুল-ফল এবং লতানো বৃক্ষরাজি।
ক্যাকটাসের মধ্যে রয়েছে গোল্ডেন ব্রেল, সাকুলান, প্যাগোডা, শাপলা, থাই ও রেড ক্যাকটাস। এছাড়া, পৃথিবীতে যতো রঙের গোলাপ আছে তার প্রায় সব কয়টির দেখা মিলবে এখানে।
গোলাপ, ডালিয়া, গন্ধরাজ, কসমস, জিনিয়া, বারবিনা গাছের চারাও উৎপাদন করা হচ্ছে ওই সবুজ ময়দানে।
স্বর্ণ চামেলি, কুঞ্জলতা, ব্লিডিং হার্ট, চন্দ্রপ্রভা, উর্বশী, ডম্রুপানি, গন্ধরাজ, ডালিম, রজনীগন্ধা, রক্তচিত্রা, ডাকুর, কৃষ্ণচূড়া, জবা, ঝুমকোলতা, সূর্যমুখী, ধুতরা, নয়নতারা, তেঁতুল, বাবলা, হাসনাহেনা, পলাশ, দুধ কচু, মৌলভী কচু, ওল কচু, মান কচু, মালঞ্চ, অন্তমোড়া, নাসপাতি, আলু বোখারা, ভুঁই চম্পা দেখে যে কেউ মুগ্ধ হবেন।
ঢাকার এই ব্যস্ত সড়কের বুকে গড়ে উঠা সবুজ বেষ্টনীর মধ্যে এলাচ, গোল মরিচ, পুদিনা বা পুদিনাপাতা, তেজপাতা, তুলসী তেজপাতা ও মরিচ গাছসহ নানা প্রজাতির মসলা গাছও রয়েছে।
ইনডোরে আছে রাবিশ পাম, অ্যাথরিয়াম, রেটিনা, লিপস্টিক, অ্যাঞ্জেলিনা, অগিস্বর, চায়নিজ পাম। আছে দেশি-বিদেশি উন্নতমানের ফুল ও ফলের সমারোহ। শতাধিক প্রজাতির ফলের গাছও রয়েছে এখানে। আছে বিভিন্ন ঔষধি গাছও।
সফেদা, আম, আমলকি, আশফল, আতা, জামির, আকুরা, আঙ্গুর, আনারস, লেবু, কদবেল, কলা, কমলা, করমচা, কাকজাম, কাটাজামির, কাউফল, কাঁকুর, কাগজি লেবু, কামরাঙা, কুল খুদিজাম, খুদিজাম, বনজাম, গাব, গাবগুলাল, গোল ফল গোলাপজাম, চামফল, চালতা চিনার, চুকুর, চেরি, জলপাই ও জামরুল গাছের চারার দেখা মিলবে এ সবুজ প্রাঙ্গণে।
সড়কের মাঝখানে বাতাসে দুলছে বাদাম, তমাল, ডাম্বেল তাল, তিমতোয়া তেঁতুল, নারিকেল লিচু, লুকলুকি, লুটকি, দাতরঙা, শরবতী ফল, প্যাসন ফল ও সাতকড়া গাছ। এখানে যেমন টববিহীন ৫০ টাকায় গোলাপ চারা বিক্রি করা হচ্ছে, তেমনি ১০ হাজার টাকায় বড় সফেদা গাছও বিক্রি হয়।
সবুজ বাংলা নার্সারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মালেক বাংলানিউজকে বলেন, সড়কের মাঝখানে এতো বড় নার্সারি রাজধানীতে আর কোথাও নেই। এখানে ফুল, ফল, মসলা, ক্যাকটাস ও অর্কিডের হাজার পদের গাছ রয়েছে।
সিটি মেয়র সবুজ ঢাকা গড়ার যে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে এ নার্সারি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
এমআইএস/টিআই/এএসআর