আমরা অনেকেই হয়ত জানি না—মানুষ ছাড়াও অন্য অনেক প্রাণীই একসম্পর্কে বিশ্বাসী। অনেকটা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার মতো করে তারাও একজন-মাত্র জীবনসঙ্গী নিয়ে বাঁচতে ভালোবাসে।
১. উল্লুক
মানুষের মতো উল্লুকরাও জীবনে একজন সঙ্গীকেই বেছে নেয়। তারা সুসংবদ্ধ পরিবার ও জুটিবন্ধনে বিশ্বাসী। উল্লুকদের মধ্যে নারী ও পুরুষ—সবার আকার এক। সঙ্গীরা একে অপরের পরিচর্যা করে সময় কাটাতে ভালোবাসে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্গীর মধ্যে একজন কখনো কখনো বিপথগামী হয় ও অপরকে ছেড়ে দেয়। এর অর্থ তাদের ধরন অনেকাংশেই মানুষের মতো। আমরা যতটা ভাবি তার চেয়েও অনেক বেশি মিল!
২. নেকড়ে
নেকড়েরাও সারাজীবনের জন্য একজন সঙ্গীকেই বেছে নেয়। নেকড়ে দম্পতি একে অপরের প্রতি অনেক বেশি বিশ্বস্ত ও অনুগত। তবে নেকড়ে বাবা-মা’র মধ্যকার সম্পর্ক দৃঢ় হলেও তাদের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে কিন্তু পারিবারিক কোনো সমঝোতা নেই। নেকড়ে ছেলে-মেয়েরা পরস্পরের প্রতি হিংস্রভাবাপন্ন।
৩. রাজহাঁস
রাজহাঁস দম্পতি বরাবরই রোমান্টিক। পুরুষ রাজহাঁসেরা বাসা তৈরি ও বাচ্চা ফোটানোতে নারী রাঁজহাসকে সাহায্য করে। যদিও কখনো কখনো পুরুষ রাজহাঁসেরা অন্য নারী হাঁসের সঙ্গে জুটি বাঁধে ও বাচ্চা ফোটায়। তবে তা সাময়িক। খুব শীঘ্রই তারা সত্যিকারের সঙ্গীর কাছে ফিরে আসে।
৪. পেঙ্গুইন
পেঙ্গুইনদের বেশিরভাগই সারাজীবনের জন্য একজনকেই বেছে নেয়। ম্যাজেলেনিক, জেন্টু ও রয়েল পেঙ্গুইন একগামী পেঙ্গুইনের প্রজাতি। এম্পেরর পেঙ্গুইন এক একটি মৌসুমে একেকজন জীবনসঙ্গীর সঙ্গে জুটি বাঁধে।
৫. বাল্ড ঈগল
দীর্ঘ দূরত্বে থেকে এই সম্পর্ক চলে। শীত মৌসুমে ঈগল একাই উড়ে বেড়ায়, এক স্থান থেকে অন্যস্থানে চলে যায়। তবে প্রতি প্রজননকালে একজন, অর্থাৎ সেই পুরনো সঙ্গীর সাথেই মিলিত হয়। এভাবে তারা অন্তত ২০ বছর একজন সঙ্গীর সঙ্গেই থাকে।
৬. কালো শকুন
বিশ্বস্ত পাখি দম্পতির মধ্যে এরা অন্যতম। যদিও একটি নারী শকুনের দৃষ্টি আকর্ষণে কয়েকটি পুরুষ শকুনের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে, তবে একবার কারো সাথে জুটি বেঁধে গেলে দলের সবাই তাদের রক্ষায় এগিয়ে আসে।
৭. মালাগাসি জায়ান্ট র্যাট
এ প্রজাতির ইঁদুর জুটির সম্পর্ক টিকে থাকে আজীবন। অন্যান্য ইঁদুরদের মতো এরা দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি করে না। বছরে একটি-দুটি সন্তান উৎপাদন করা তাদের বৈশিষ্ট্য। দম্পতির মধ্যে কেউ একজন যদি মারা যায় সেক্ষেত্রে তারা অন্য সঙ্গী বেছে নেয়। তবে এক্ষেত্র নারী ইঁদুরটি বিধবা হলে পরবর্তী সঙ্গী না পাওয়া পর্যন্ত নিজের ঘরেই থাকে, বের হয় না।
৮. ফ্রেঞ্চ অ্যাঞ্জেলফিশ
অ্যাঞ্জেলফিশের জীবনধারণ, ঘুরে বেড়ানো ও শিকার সবই জোড়ায় জোড়ায়। নিজেদের অঞ্চল রক্ষায় তারা আগ্রাসী যোদ্ধা। আর সারজীবনে একজন সঙ্গীকেই বেছে নেয়।
৯. সারস পাখি
বছরের পর বছর এরা একসঙ্গে থাকে। বসন্তের শুরুতে জোড়া গঠন করে। তরুণ ও সঙ্গী হারানো সারস পাখিরা বিশদ সঙ্গম নাচে অংশ নেয়।
১০. গোলা পেঁচা
গোলা পেঁচারাও প্রধানত একগামী প্রাণী। তবে পুরুষ গোলা পেঁচাদের একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার দুর্নাম আছে। তারা নারী পেঁচাদের মরা ইঁদুর উপহার দিয়ে খুশি করতে চেষ্টা করে। এছাড়াও ওড়ার ভঙ্গি দিয়ে নারীসঙ্গীর মন ভোলানোয় পটু। নারীসঙ্গী আকৃষ্ট হলে এক ধরনের শব্দ করে। যা থেকে বোঝা যায় তার সম্মতি রয়েছে। ডিম পাড়ার এক মাস আগে পুরুষ পেঁচা তার সঙ্গীর জন্য শিকার ধরে আনে।
১১. বীবর
সঙ্গীর মৃত্যু হওয়া পর্যন্ত তারা একসঙ্গে থাকে। ইউরোপিয়ান বীবরদম্পতি একে অপরের প্রতি আস্থাশীল। জেনেটিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, একই পরিবারের বীবরের মিলনেই তাদের সন্তান জন্ম হয়। এক কলোনির বীবর অন্য কলোনির বীবরের সঙ্গে মিলিত হয় না। তবে নর্থ আমেরিকার বীবররা নিজেদের সঙ্গী ছাড়াও অন্য বীবরদের সঙ্গে জুটি বাঁধে। তবে এ অপরাধে তাদের পারিবারিক বন্ধন ভেঙে যায় না।
১২. শিঙ্গলব্যাক স্কিন্ক
এদের সম্পর্ক টেকে প্রায় বিশ বছর পর্যন্ত। নারীসঙ্গী বাচ্চা দেবার সময় পুরুষ লিজার্ডটি চারপাশে পাহারা দেয়। একজন সঙ্গীকে বেছে নেয় এরা। বন্ধনের আগে পুরুষ লিজার্ড নারী লিজার্ডের প্রতি স্নেহ ও সহানুভূতি প্রকাশ করে।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৬
এসএমএন/টিকে
ফিচার
বিবাহে বিশ্বাসী ১২ প্রাণী
ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।