ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

অতীতে নৌকা চলতো এখন পানিও চলে না

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৩ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৬
অতীতে নৌকা চলতো এখন পানিও চলে না ছবি:জি এম মুজিবুর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: অতীতে খালটিতে নৌকা চলতো, এখন সেখানে পানিও চলে না। এমন একটা সময় ছিলো, যখন স্রোতের টানে ভেসে বেড়াতেন মানুষ।

কিন্তু কালের বিবর্তনে আজ তার যৌবন হারাতে চলেছে খালটি, নিজস্ব স্বীকয়তাও আর নেই।

খালটির নাম আরামবাগ খাল, ব্রাঞ্চ ২। রাজধানীর রূপনগর আবাসিক, শিয়ালবাড়ি, মিরপুর ৬,৭ ও ১১ নম্বর হয়ে ১২ নম্বর ও দোয়ারিপাড়ার ওপর দিয়ে গিয়ে মিশেছে তুরাগ নদীতে।


খালটিতে সাইনবোর্ডে খোদাই করে লেখা আছে- ‘এখানে বাসা-বাড়ি, সাঁকো, পানির লাইন, টয়লেট ও দোকান, রিকশার গ্যারেজ করা যাবে না। খালের মধ্যে বাড়ির আবর্জনা ও পাইলিংয়ের কাদা ফেলা যাবে না’।

কিন্তু আরামবাগ খালের ওপর অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে বাসা-বাড়ি, এমনকি রিকশার গ্যারেজও। এখানে হরহামেশাই চলছে দখলবাজি। কেউবা আবার পেশিশক্তি ব্যবহার করে এখানে নির্মাণ করছেন বিভিন্ন অফিস। যদিও ঢাকা ওয়াসা থেকে এগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
খালটির ওপরে জায়গা দখল করে বিভিন্ন ধরনের মালামাল রাখা হচ্ছে। কোথাও বা আবার খালটিকে দখল করে একেবার ছোট করে ফেলা হয়েছে। সেখানে একটি সাঁকো তৈরি করে মানুষ পার হচ্ছেন। এভাবে প্রতিনিয়ত খালটি তার যৌবন হারাচ্ছে। আর দিন দিন পরিণত হচ্ছে ময়লার ভাঁগাড়ে।
কালভার্টটির উত্তর দিক দখল করে গড়ে উঠেছে ছোট মিয়ার বস্তি। এটি পরিচালনা করেন জনৈক জনির মা। এ বস্তিতে আছে প্রায় ৩০টি রুম। প্রতিটি রুমের ভাড়া ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। এর একটু দূরে খালের ওপরে রয়েছে শত শত টিনের ঘর।
এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আমীর হোসেন মোল্লা বলেন, ‘মিরপুর ১০ নম্বর থেকে শুরু করে ৬,৭ নম্বর রূপনগর আবাসিক ও আরামবাগ ইস্টার্ন হাউজিংয়ে যতো মানুষ বসবাস করেন, তাদের ব্যবহৃত পানি এই আরামবাগ খাল হয়ে তুরাগ নদীতে পড়ে’।

‘খাল দখল করে অনেকেই বসত-বাড়ি তৈরি করছেন, খালের পানি চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি করছেন। ফলে আমরা যারা এলাকার বাসিন্দা, তাদেরকে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে হাবুডুবু খেতে হয়। দখলদারদের সরকার যদি এক/দুই মাসের মধ্যে উচ্ছেদ না করে, তাহলে খালের নামফলক থাকবে, কিন্তু পানি যাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে না’।

ইস্টার্ন হাউজিংয়ের বাসিন্দা মো. আজিজুর রহমান (৬০) বলেন, ‘আমি জন্ম থেকেই এখানে বসবাস করছি। এখানে আগে নৌকা চলতে দেখেছি। কিন্তু এখন নৌকা তো দূরের কথা, পানিও বের হতে পারে না। আর যতোটুকু পানি বের হচ্ছে, তারও দুর্গন্ধে এলাকায় বসবাস করাই মহাবিপদ হয়ে পড়েছে। প্রতি ৩ বা ৪ মাস পর পর সিটি করপোরেশনের লোক এসে একটু একটু করে পরিষ্কার করেন, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয় না।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৬ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।