ঢাকা: ফোয়ারা স্কাল্পচার টাওয়ারের তুঙ্গে বসে এক নরমূর্তি। ডানহাতে ধরা একটি নবজাতক শিশুর মাথা অর্ধেকখানি ঢুকে গেছে তার দৈত্যমুখে।
কাইন্ডলিফ্রেশার ফোয়ারা কোনো আধুনিক শিল্পকর্ম নয়। ১৫৪৫-৪৬ সালে নির্মিত ফোয়ারাটি সুইজারল্যান্ডের বার্নের প্রাচীনতম ফোয়ারাগুলোর মধ্যে অন্যতম। পঞ্চদশ শতাব্দীর সুইস রেঁনেসা ভাস্কর হানস জিংয়ের নির্মিত এ ফোয়ারার আসল নাম প্লাটজব্রুনেন। ১৯৬৬ সালে এর নাম বদলে হয় কাইন্ডলিফ্রেশার। যার অর্থ- শিশু খাদকের ফোয়ারা।
আশ্চর্যের বিষয়, কেউ ঠিক নিশ্চিত নন অদ্ভুতদর্শন স্থাপত্যটি এখানে কেন, বা এমন কেন। প্রশ্ন উঠলেই তিনটি তত্ত্ব এগিয়ে আসে।
প্রথম তত্ত্বটি সবচেয়ে দুঃখজনক। কাইন্ডলিফ্রেশার ফোয়ারা ভাস্কর্যটি বার্নের ইহুদি সম্প্রদায়কে সতর্ক করার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। এটি ব্লাড লিবেল এগেইনস্ট জিউসের একটি অভিব্যক্তি। ব্লাড লিবেল এগেইনস্ট জিউস হলো ইহুদিদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ। এখানে সতর্ক করা হচ্ছে- ইহুদিরা যেনো রক্ত দিয়ে নিজেদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের জন্য খ্রিস্টান শিশু হত্যা না করে। ভাস্কর্যে ইহুদি সম্প্রদায়কে রাক্ষস্বরূপ দেওয়া হয়েছে। রাক্ষসটি যে টুপি পরে রয়েছে তা জুডেনহ্যাট নামে পরিচিত। ওই সময়কালে ইহুদিরা এই টুপি পরতে বাধ্য থাকতো।
দ্বিতীয় তত্ত্ব, অাতঙ্কজনক রাক্ষসটি গ্রিক টাইটান দেবতা ক্রোনাসের প্রতিমূর্তি। ক্রোনাস নিজের সিংহাসন দখলের আশঙ্কায় নিজের দেবসন্তানদের নিজেই খেয়ে ফেলতো।
সর্বশেষ তত্ত্বটি হলো, কাইন্ডলিফ্রেশার ডিউক বার্চটোল্ডের (বার্নের প্রতিষ্ঠাতা) বড় ভাইয়ের প্রতিরূপ। বার্চটোল্ডের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঈর্ষান্বিত সম্পর্ক তার বড় ভাইকে পাগলপ্রায় করে তোলে। তখন সে ক্রোধবশত ছোট ছোট শিশু সংগ্রহ করতো আর খেতো।
হতে পারে উপরের কোনোটিই যুক্তিনির্ভর নয়। শেষ পর্যন্ত যা পাওয়া যায়- এটি একটি কার্নিভাল চরিত্র। যা দিয়ে অবাধ্য ছেলেমেয়েদের কথা না শোনার ও দুর্ব্যবহার করার ফলাফল বুঝিয়ে আসছে সুইস বাবা-মায়েরা।
তবে কাইন্ডলিফ্রেশার যে অর্থই প্রকাশ করুক না কেন, এটি গত পাঁচশো বছর ধরে সুইস শিশুদের আতঙ্কিত করে আসছে। রহস্য গড়ে তুলছে পর্যটকদের চোখে।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৬
এসএমএন/এএ