ঢাকা: রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের গেটে বসে সিদ্ধ ডিম বিক্রি করে পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়েছেন মো. আব্দুর রশিদ। এখনো পরিবারের হাল ধরে রাখা সত্তরোর্ধ্ব এ ব্যক্তির গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের বটপুর বাদাম তলায়।
এক সময় তিন ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে বেশ ভালোই কাটছিলো তার। কিন্তু ২০০৮ সালের বন্যায় সব হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েন আব্দুর রশিদ। নিজের প্রায় এক একর জায়গায় গড়া চিংড়ির ঘের ভেসে যায়। প্রায় দুই লাখ টাকা দেনা হয়ে পড়েন। পাওনাদারদের ভয়ে জীবনের চাকা ঘোরাতে রাজধানীমুখী হন।
সদা ছুটে চলা রাজধানীতে এসে চোখেমুখে অন্ধকার দেখেন আব্দুর রশিদ। উপায় না পেয়ে এক সময় সিদ্ধ ডিম বিক্রি শুরু করেন।
সোমবার (২১ নভেম্বর) আনুমানিক রাত ২টার দিকে কথা হয় রশিদ চাচার সঙ্গে। কথায় কথায় তুলে ধরেন আগের ও বর্তমান অবস্থার চিত্র। তিনি বলেন, এখানে রাত-দিন মিলে প্রায় ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ ডিম বিক্রি হয়। প্রতিটি হাঁসের ডিমের দাম ১৫ টাকা আর লাল ডিম ১২ টাকা করে বিক্রি হয়। বিক্রি করে দিনে ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকা লাভ থাকে তার।
আব্দুর রশিদ বলেন, আগে অনেক অভাব ছিলো। এখন ভালোই আছি। বর্তমানে বাবর রোডের ১৩/২০ হাজি আক্কাস টিনশেড বাড়িতে ভাড়া থাকেন। প্রতিমাসে ঘর ভাড়া বাবদ খরচ হয় সাড়ে ৪ হাজার টাকা। দুই ছেলে আর স্ত্রীকে নিয়ে বেশ ভালোই আছি। দেনা পরিশোধ করে এখন গ্রামে কিছু জমিও কিনেছি।
সারাদিন ছেলে ডিম বিক্রি করে। তবে রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে তিনি দায়িত্ব বুঝে নেন। দুই ছেলে গাড়ির হেলপারি করে, এক ছেলে গ্রামের বাড়িতে কাজ করে।
আব্দুর রশিদ বলেন, আগে অনেক অভাব ছিলো। এখন মোটামুটি স্বচ্ছলতা এসেছে। গ্রামে যে জমি আছে তা টাকা ও ধানে বন্ধক রাখা হয়েছে।
ডিমের খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে বলতে থাকেন, এখন এলাকায় চলে যেতে ইচ্ছে করে, কিন্তু ছেলেরা যেতে চায় না।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৬
এসএম/জেডএস