তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
০২ মার্চ, ২০১৭, বৃহস্পতিবার। ১৮ ফাল্গুন, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ। একনজরে দেখে নিন ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
ঘটনা
• ১৯৪৪ - ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নেপলসে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ৫২১ জনের মৃত্যু।
• ১৯৪৮ - মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে চলমান আন্দোলনকে বেগবান করতে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। এই পরিষদের ব্যানারেই চলে পরবর্তী আন্দোলন সংগ্রাম, যার চূড়ান্ত পরিণতি হয় ১৯৫৬ সালে গণপরিষদ বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি আদায়ের মাধ্যমে।
•১৯৭১ - ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনে শিক্ষার্থীদের সমাবেশে প্রথমবারের মতো স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। একাত্তরের মার্চ ছিল মুক্তিকামী বাংলাদেশে উত্তপ্ত এক সময়। এই মার্চেই শুরু হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার অগ্রযাত্রা। ১ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঘোষণা করেন, জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত। এ ঘোষণার ফলে পূর্ব পাকিস্তানে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি পার্টির সঙ্গে আলোচনা করে অসহযোগ ও আইন অমান্য আন্দোলনের মাধ্যমে স্বায়ত্বশাসন আদায়ে বদ্ধপরিকর মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি ৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ইয়াহিয়ার ঘোষণার পরপরই ছাত্রলীগ সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ, ডাকসু ভিপি আসম আবদুর রব ও জিএস আবদুল কুদ্দুস মাখনের সমন্বয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। ছাত্রলীগের একটি অংশ বঙ্গবন্ধুর ‘অহিংস’ কর্মসূচিতে সন্তুষ্ট হলো না। তারা সিদ্ধান্ত নিল ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রসমাবেশ করার। ওইদিন রব-সিরাজ-ইনুদের পরিকল্পনায় শিবনারায়ণ দাস গাঢ় সবুজের মাঝখানে উজ্জল সূর্যের প্রতীক লাল রং এবং তার মাঝে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা আঁকেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চারদিক থেকে শিক্ষার্থীদের মিছিল এসে জমায়েত হয় ঢাবি কলাভবন চত্বরে। নতুন স্লোগান তৈরি হয়, ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’ ও ‘তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা’। নদীর ঢেউয়ের মতই আন্দোলিত হচ্ছিল কলাভবন চত্বরের মাথাগুলো। হঠাৎ করে একটু চঞ্চল হয়ে উঠে সমবেত সবাই। আর এই মুহূর্তেই ধীরে ধীরে বাঁশের মাথায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন ডাকসু ভিপি আসম আবদুর রব। চারদিক মুখরিত হল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। রচনা হয় ইতিহাসের আরেক অধ্যায়। আর সেই থেকেই বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে আজও আকাশে উড়ছে লাল সবুজের পতাকা।
ব্যক্তি
• ১৭৯১ - ইংরেজ যাজক ও পদ্ধতিবাদের জনক জন ওয়েসলির প্রয়াণ।
• ১৮৪৫ - প্রখ্যাত অভিধানকার ও পণ্ডিত রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের প্রয়াণ।
• ১৯৩০ - ইংরেজ কথাসাহিত্যিক ও কবি ডিএইচ লরেন্সের মৃত্যু।
• ১৯৪৯ - ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতাসংগ্রামী, বাগ্মী ও ইন্দো-অ্যাংলিয়ান কবি ও রাজনীতিক সরোজিনী নাইডুর প্রয়াণ। ভারতীয় কোকিল বা দ্য নাইটেঙ্গেল অব ইন্ডিয়া নামে পরিচিত নাইডু ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৫ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৭
এইচএ/