ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

দিনাজপুরে কৃষিকাজে চাহিদা বাড়ছে নারী শ্রমিকের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৯ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৭
দিনাজপুরে কৃষিকাজে চাহিদা বাড়ছে নারী শ্রমিকের খেতে কাজ করছে দিনাজপুরের নারী শ্রমিকরা

দিনাজপুর: খাদ্যশষ্যের ভাণ্ডার নামে খ্যাত দিনাজপুরে কৃষিকাজে নারী শ্রমিকের চাহিদা বাড়ছে। স্বল্প মজুরিতে অধিক শ্রম দেওয়ায় দেশের এই খাতটিতে নারী শ্রমিকের কদর দিন দিন বেড়েই চলছে। তবে চাহিদা বাড়লেও এ খাতে নারী শ্রমিকের নেই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি বা পরিচয়পত্র। আজও তারা মজুরি বৈষম্যে শিকার।

এখানকার নারীরা ঘর কন্যার পাশাপাশি কৃষিকাজে পুরুষের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছেন। দিনাজপুরের নারী কৃষি শ্রমিকরা পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জমিতে বীজ রোপণ, সার-কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা বাছাই, ধান কাটা-মাড়াইসহ ফসল উৎপাদনে সব ধরনের কাজে মূখ্য ভূমিকা রাখছেন।

শুধুই ধান উৎপাদনে নয় বাড়ির আশপাশে শাক-সবজি চাষ, গবাদি পশু গরু-ছাগল, হাস-মুরগি পালনেও তাদের ভূমিকা রয়েছে। কৃষিকাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এখানকার নারী কৃষি শ্রমিকদের যেমন নেই ন্যায্য মজুরি, তেমনি নেই প্রান্তিক সুবিধাসহ সামাজিক নিরাপত্তা।

কিছুদিন আগেই কৃষকের মাঠ জুড়ে রোপণ করা হয়েছে ধানের বীজ। বর্তমানে ধান গাছের চারপাশে গড়ে উঠেছে আগাছা। আর বর্তমানে সবুজ মাঠে ধান গাছের আগাছা বাছাইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার নারী শ্রমিকরা।

দিনাজপুর সদর উপজেলার ৬ নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের রামনগর এলাকায় খেতে আগাছা বাছাই কাজে ব্যস্ত একদল নারী কৃষি শ্রমিক।

সেখানকার শ্রাবন্তী রায় নামে এক নারী শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, আগাছা বাছাই কাজে দৈনিক আড়াইশ টাকা করে পেয়ে থাকি। একই কাজে পুরুষরা পায় সাড়ে তিনশ টাকা। আবার পুরুষরা কাজও করে আমাদের থেকে কম। তারপরও পেটের তাগিদে আমাদের কাজ করতে হয়। মজুরির ব্যাপারে কথা বলতে গেলে আমাদের আর কাজে নেয়না। তাই যা পাই তা নিয়ে সন্ত‍ুষ্ট থাকি।

বালাকান্তি নামে অপর এক নারী শ্রমিক বলেন, বেশি সময় ধরে সঠিকভাবে কাজ করলেও পুরুষদের চেয়ে কম মজুরি পাই। যা পাই তা দিয়ে আমাদের পোষায় না। সংসারের সব কাজ শেষ করেই কৃষি জমিতে কাজ করতে আসি।

তিনি আরো বলেন, আমরা কতটা কষ্ট করে ফসল উৎপাদন করছি। একবার দেখে যান! আমাদের কষ্ট বোঝার কেউ নেই? তিনি দাবি করে বলেন, অন্তত মজুরি বৈষম্যটা দূর করলেও আমাদের অনেক উপকার হতো।  

দিনাজপুর সদর উপজেলার কমলপুর এলাকার কৃষক আবুজার বাংলানিউজকে জানান, কৃষিকাজে পুরুষের তুলনায় নারী শ্রমিকরা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর কারণ হলো পুরুষরা কাজে থাকাকালীন চা-পান খেয়ে সময় নষ্ট করেন। আর নারীরা বিরতিহীন কাজ করেন। তাছাড়া তাদের মজুরিও কম। অধিক সময় ধরে সঠিক কাজ পাওয়ায় নারী শ্রমিকদের কদর দিন দিন বেড়ে চলেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, ০৮ মার্চ, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।