দরদী এ শিল্পীর কন্ঠে গাওয়া এ গানের মতোই নয়নাভিরাম, ছিমছাম, প্রকৃতির মাঝে বেড়ে উঠা আর মনমুগ্ধকর এক গ্রামের নাম বাদেকল্পা।
ময়মনসিংহ নগরী থেকে খানিক পথ দূরে এ গ্রামে চোখের সামনে ধরা দেয় বিশাল সবুজে ভরা মাঠ।
কোথাও স্বপ্নের বোরো ফসল ফলাতে উদয়াস্ত ব্যস্ত চাষী। ফসলি জমিতে সেচ দেয়ার কাজও করছেন কেউ কেউ। ঘাম ঝরানো বোরো ফসল নিয়ে তাদের স্বপ্ন-সাধেরও যেন নেই শেষ। ক্ষেতের পাশেই মাটির ঘর, পরিষ্কার উঠোন।
এ উঠোনে বসেই গোবরে তৈরি শলার লাকড়ি বা মুইঠ্যা তৈরিতে ব্যস্ত গৃহবধূ। ঠিক যেন প্রকৃতিপ্রেমী শিল্পীর পটে আকাঁ ছবির মতো প্রাণ প্রাচুর্যে ভরপুর ময়মনসিংহ সদর উপজেলার এ গ্রাম।
বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষক
ভারতীয় উপ-মহাদেশের এক সময়ের বৃহত্তম জেলা ময়মনসিংহ খাদ্য শষ্যের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত। মাঠের আসল নায়ক কৃষক এখন বোরো আবাদে দিন-রাত খাটছেন। গামলায় ভরে বোরো জমিতে সার ছিটাতে শুরু করেছেন।
বড়শি
সবুজ ধানক্ষেতের পাশেই ডোবা। সেখানে বড়শি দিয়ে তাজা মাছ ধরতে ব্যস্ত অনেকেই। গরম ভাতের সঙ্গে তরতাজা মাছ ভাজা কিংবা মাছের ঝোল মুখরোচক।
কাকতাড়ুয়া
ফসলি জমিতে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে কাকতাড়ুয়া। পশু-পাখির উৎপাত থেকে রক্ষা পেতে জমির মাঝখানে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় এ কাকতাড়ুয়া। গ্রামের সবুজ ধান ক্ষেতে এমন কাকতাড়ুয়ার দেখা মেলে।
সেচ
গ্রামের মাঠে ঝলমলে সোনারাঙা রোদ পড়েছে। অফুরান সবুজের সমারোহ চারিদিকে। সকাল থেকেই মাঠে নিবিষ্ট মনে সময় দিচ্ছেন কৃষক। ফসলি জমিতে অনেকে সেচ দেয়ার কাজও করছেন। মাঠে মাঠে দেখা মেলে কৃষকের এমন কর্মযজ্ঞ।
মুইঠ্যা
জ্বালানি চাহিদা মেটাতে গ্রামে গ্রামে পুরোদমে চলছে গোবর শলার তৈরি লাকড়ি বা মুইঠ্যা। গরুর গোবর, পাটখড়ি আর ধানের কুড়া দিয়ে তৈরি করা হয় এ লাকড়ি। এরপর এ লাকড়ি রোদে শুকানো হয়। রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয় এ লাকড়ি বা মুইঠ্যা। গ্রামীণ গৃহবধূর হাতে তৈরি গোবরের এ লাকড়ি শহরেও সমান জনপ্রিয়। গ্রামীণ গৃহবধূরা এ লাকড়ি তৈরি করে নিজেদের জ্বালানি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিক্রি করেও সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৭
এমএএএম/জেডএম