এ দৃশ্যেও তার কোনো ব্যতিক্রম ঘটেনি।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পথ ধরে এগিয়ে যেতে যেতে হঠাৎ এমন মমতার দৃশ্যে চমকে যেতে হয়।
প্রকৃতিতে তখন সন্ধ্যা নামার প্রস্তুতি। আকাশের ভাঁজে ভাঁজে হঠাৎ ধেয়ে আসা কালো মেঘগুলো আসন্ন সন্ধ্যাকে আরও গাঢ় করে তুলছিল। সন্ধ্যার এমন দ্রুত এগিয়ে আসা দেখে ভ্যান চালকের পায়ের প্যাডেল দ্বিগুণ গতিতে ঘোরে।
তাদের পরিচয় জানতে চাইলে ছুটে চলায় এলো ক্ষণিক বিরতি। জানা গেলো, মাইজদিহি চা বাগানে ফুলছড়া গারো লাইনের অধিবাসী কামিলুস তার পাঁচ বছরের মেয়ে অর্ণিকাকে নিয়ে সাত্তার মিয়ার ভ্যানে করে বাড়ি ফিরছেন। সুদৃঢ় মেহগুনি কাঠের উপর ছোট্ট মেয়েটিকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ার ভঙ্গিতে ছুটে চলেছেন কামিলুস। সন্তানটিও মমতার পরশ পেয়ে নিশ্চুপ ভঙ্গিমায় পড়ে রয়েছে পিতার ভালোবাসাময় পাঁজরের উপর।
আসলে দৃশ্যটি সাদামাটাভাবে দেখলে ধরা পড়বে, এক লোক তার মেয়েকে কোলে নিয়ে কিছু কাঠ কিনে ভ্যানে করে বাড়ি ফিরছেন। কিন্তু অনুভূতির চোখ দিয়ে দৃশ্যটির দিকে তাকালে সেখানে হয়তো পাওয়া যাবে- পিতার স্নেহের পরশ, জীবনের একেকটি গন্তব্যে পৌঁছানোর নীরব তাগিদ, শ্রমজীবী মানুষের দৈনিক-সংগ্রাম প্রভৃতি।
এই দৃশ্যে শুধুই তিনটি চরিত্র। পিতা, কন্যা আর ভ্যান চালক। যা সমানভাবে, সমানগুরুত্বে উপস্থিত। প্রত্যেকেই নিজস্ব গন্তব্যে পৌঁছার অভিযাত্রায় অগ্রগামী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৭
বিবিবি/এসএনএস