খোসবাগ থেকে রোশনিবাগ একটি বাঙালি গ্রাম। আসলে পৃথিবীর সব গ্রামের চিত্রই এক।
কৃষি নিয়েই এ গ্রামের মানুষের নিত্যদিনের কর্মমুখরতা। তাদের জীবন সংস্কৃতি কৃষিকে ঘিরে।
আবহমান বাংলার গ্রাম বলতে যা বোঝায় তা আজ আর নেই। গ্রাম আজ শহরের দিকে তাকিয়ে আছে। শহরকে সে কাছে পেতে চায় অথবা শহরের মাঝে ঢুকে যেতে চায়। খোসবাগ-রোশনিবাগে কুঁড়েঘর বলতে কিছু নেই। তবে মাটির ঘর চোখে পড়লো অনেক। বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে সব বাড়িতেই।
সব বাড়ির সামনেই আছে আঙিনা। বাড়ির পেছনে উঁকি দেয়া তাল গাছ খেজুর গাছের সাড়ি, আর একটু পাশেই আছে ভাগীরথী নদী। যদিও এই নদীতে আজ আর পালতোলা নৌকা নেই। সবই ইঞ্জিন চালিত নৌকা। বাংলার ইতিহাস যেনো এই ভাগীরথী নদীর মতোই একই ধারায় বহমান।
পথ আঁকা-বাঁকা তবে তা মেঠোপথ নয়। পথের দুই ধারে সবুজের মাঠ। ধান চাষই বেশি হয়। ইঞ্চি পরিমাণ জমিও পতিত পরে নেই কোথাও। পরিকল্পিত আবাদ হচ্ছে সব জমিতে। জমিতে সেচের ব্যবস্থাও করে নিয়েছে সবাই। তবে মাঝে মাঝে সরকারও পানির পাম্প বসিয়ে দিয়েছে। বাড়ির সামনে দুই-চারটা গরু, মহিষ নেই এমন বাড়ি খুজে পাওয়া ভাড়।
মুর্শিদাবাদ এক সময় রেশম চাষের জন্য বিখ্যাত ছিল। কাসিম বাজারের রেশম খ্যাতির জন্য ইংরেজ বণিকরা এদেশে এসেছে। কাসিমবাজার ইংরেজ কুঠির বাণিজ্যিক কারণও এই রেশম।
মুর্শিদাবাদে সাধারণ চলাচলের জন্য নারী-পুরুষ সবাই সাইকেল ব্যবহার করে। শহরের চেয়ে বরং গ্রামে সাইকেল বেশি। গ্রামের মেয়েরা শাড়ি, স্যালোয়ার-কামিজ পড়েই সাইকেল চালায়। শহরেও তাই। বাড়ি থেকে স্কুল যেতেও ছেলে-মেয়েরা সাইকেলে যায়।
খোসবাগ থেকে রোশনিবাগের এই সড়কটির বেহাল দশা। পুরোই রাস্তাতেই খানা-খ্ন্দ। অথচ এই সড়কে অনেক পর্যটকই যাতায়ত করে। আর সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের ভোগান্তি তো আছেই।
গ্রামের এই পথ ধরে চলতে চলতে আবহমান বাংলারই এক চিরচেনা গ্রাম খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলার ইতিহাসের সাথে এই খোসবাগ-রোশনিবাগের সম্পর্কতো অচ্ছেদ্য। কিন্তু বাংলার অবহেলিত লক্ষ গ্রামের মতোই ইতিহাসও এখানে অবহেলিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৭
এমজেএফ