মা তো মিষ্টির পাশাপাশি আমাদের ফিরিঙ্গিবাজারের বংশাল রোডের বাসায় রীতিমতো কেক নিয়ে এসেছেন। কাকা বিপুল ধর, কাকি জয়া ধর, কাজিন অনিন্দ্য ধর, আদ্রিতা ধরসহ কেক কেটে আমরা এসএসসি পাসের আনন্দ উদযাপন করেছি।
পরীক্ষার দিনগুলোর কথা এখন খুব বেশি মনে পড়ছে। বায়োলজি পরীক্ষাটা মনমতো দিতে পারিনি। ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের দিন হলে পৌঁছে শুনলাম প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। মনটা খুব ছোট হয়ে গিয়েছিল। এত কষ্ট করে পড়াশোনা করলাম। তারও আগে সৃজনশীলে সাতটি প্রশ্ন চাপিয়ে দেওয়া হলো। এমনকি গণিতেও। বাংলা, সমাজ, ধর্মে সৃজনশীলের সাতটি উত্তর আড়াই ঘণ্টায় লেখাটা কঠিনই ছিল। আমাদের পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে বারবার নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে, এটি যদি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকত তবে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় আনন্দ পেত। মা-বাবা, শিক্ষকরাও হাপ ছেড়ে বাঁচতেন।
আমাকে মা খুব বেশি চাপ দিতেন পড়ার জন্য। সদ্য আমেরিকা প্রবাসী দাদু ও দিদাও পরীক্ষার প্রস্তুতিকালে নানাভাবে প্রেরণা জুগিয়েছেন। কলেজিয়েট স্কুলের সুশান্ত স্যার, ফেরদৌস আরা ম্যাডাম, ইংলিশে মাইকেল স্যার, রাসেল স্যার, পাভেল স্যারের কাছে পড়েছি। বাসায় গড়ে ২-৩ ঘণ্টা পড়েছি। হ্যাঁ, পরীক্ষার সময় রাত দুটা-তিনটা পর্যন্তও পড়েছি। টেনশনে ঘুমই আসত না।
আমার বান্ধবী ঐশী, দিবা, নৈঋতাও জিপিএ-৫ পেয়েছে। যা আমার আনন্দকে দ্বিগুণ করেছে। আমাদের বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে ৭৪ জন এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। এর মধ্যে ৪৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছি।
পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি আমি মুহম্মদ জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশনের পড়ি এবং কম্পিউটারে প্রোগ্রামিং শিখি। আমি রোবটিক ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। যদিও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ৭ হাজার ৪৩৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে এবার। স্বাভাবিকভাবেই ভালো কলেজে পড়াশোনার সুযোগ পাওয়াটা উদ্বেগের।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৭
এআর/টিসি