ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

অর্ধেক শরীর নিয়েই বাজিমাৎ

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
অর্ধেক শরীর নিয়েই বাজিমাৎ অর্ধেক শরীর নিয়েই বাজিমাৎ

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অধিবাসী অ্যারন ভোলিন পরিচিত ডানপিটে অর্ধমানব হিসেবে। মাত্র অর্ধেক শরীর নিয়ে জন্মগ্রহণ করলে কি হবে, কখনো তিনি চড়ে বসছেন স্কেট বোর্ডের উপর, আবার কখনো দেখাচ্ছেন হাতের উপর ভর করে কাচের উপর দিয়ে হাঁটার খেলা।

৪০ বছর বয়সী অ্যারনের শরীরের নিচের অংশ নেই। পেশা হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন সার্কাসে বিভিন্ন প্রকার খেলা দেখানো।

অসাধারণ সব প্রদর্শনী ও বিপদজনক সব খেলা দেখিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করার পাশাপাশি পরিচিতি পেয়েছেন বিশ্বমহলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অর্জন করেছেন জনপ্রিয়তা।  

দর্শক মাতাতে কোনো জুড়ি নেই অ্যারনের। স্থানীয় একটি সার্কাসে কাজ করেন তিনি। প্রদর্শনীর সময় নানারকম খেলা উপস্থাপন করেন দর্শকদের সামনে। এসব খেলার মধ্যে কোনোটা কোনোটা আবার চরম বিপদজনক। অ্যারন হাতে ভর দিয়ে নিজেকে ছুড়ে দেন দর্শকদের ভিড়ে। কখনো দেখান ছুরি নিক্ষেপে তার নির্ভুল নিশানার প্রদর্শনী। জ্বলন্ত মশাল হাতে আগুনের খেলাও দেখান তিনি। আবার কখনো স্টেজে কৌতুক উপস্থাপন করে হাসান দর্শকদের।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফির সম্প্রতি প্রকাশিত এক ডকুমেন্টারিতে দেখা মেলে অ্যারনের ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনের চিত্র। তিনি বলেন, ‘আমি যেন স্বপ্নের জীবন উপভোগ করছি’।  

স্টেজে অ্যারনের এমন ডানপিটে চরিত্রের দেখা মিললেও এ পর্যন্ত পৌঁছাতে তাকে পার করে আসতে হয়ে কঠিন সংগ্রামী জীবন। ছোটবেলায় বাবা-মায়ের আদর ঠিকমতো পাননি তিনি। মাত্র ১২ বছর বয়সে মায়ের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে শুরু হয় তার একাকী পথচলা।  

অর্ধেক শরীর নিয়েই বাজিমাৎসার্কাসে নাম লেখানোর জন্য প্রশিক্ষণ নেন তিনি। অর্ধেক শরীর নিয়েই তাকে যেতে হয় কঠিন পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে। অ্যারনের পরিশ্রম বৃথা ব্যয় হয়নি। একজন স্বাভাবিক দেহের মানুষের মতোই সব কাজকর্মই তিনি করতে পারেন সাবলীলভাবে। ছুটির দিনে বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে যান, সহকর্মীদের সঙ্গে অবসর সময়ে তাস খেলেন, একইসঙ্গে নিজের পোষা কুকুরের দেখভাল নিজেই করেন।

স্টেজের বাইরে যেন অন্য মানুষ অ্যারন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বন্ধুবৎসল ও আমুদে স্বভাবের। অ্যারন বলেন, পেশাদার জীবন ও ব্যক্তিগত জীবনকে আমি সবসময়ই আলাদা রাখার চেষ্টা করি। পেশার খাতিরে আমি অনেক বিপদজনক স্টান্ট প্রদর্শন করি, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে আমি খুবই আবেগপ্রবণ একজন মানুষ।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফির ফটো জার্নালিস্ট ব্রায়ান লেম্যান বলেন, অ্যারনের জীবন-যাপনের ছবি তোলার জন্য আমাকে তার সঙ্গে অনেক বেশি সময় কাটাতে হয়েছে। এই সময়ে আমি একবারও একঘেঁয়েমি অনুভব করিনি। ব্যক্তিগত জীবনের কোনো কিছুই সে আমার থেকে লুকোয়নি। অ্যারনের জীবননির্ভর ডকুমেন্টারি তৈরির জন্য লেম্যান প্রায় দু’বছর ধরে তার ছবি তোলেন।

কোনো কিছুই যেন থামাতে পারে না অ্যারনকে। প্রতিদিন নিত্যনতুন বিভিন্ন স্টান্ট অনুশীলন করতে দেখা যায় তাকে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার কাজ আমি ভালোবাসি। সবাইকে আমি ঠাট্টা করে বলি, একমাত্র মৃত্যুই আমাকে অবসর এনে দিতে পারে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।