শহরের কোলাহল থেকে বেরিয়ে দুর্বা ঘাসে মোড়া ধূলিওড়া মেঠো পথ, ভরা পূর্ণিমার জ্যোৎস্না, কুয়াশা ঢাকা বিস্তৃর্ণ মাঠ, হিমেল হাওয়ার সঙ্গে পাহাড়ি বনফুলের গন্ধ আর পাহাড়ের উঁচু উঁচু টিলা মিলিয়ে এক অপরূপ সৌন্দর্য।
কু ঝিক ঝিক শব্দ করে এগোতে থাকা উপবন এক্সপ্রেসটি বাতাসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই যেন এগিয়ে চলছিলো।
বেশ গোছানো একটা প্লাটফর্ম। ওয়েটিং রুমটাও বেশ ছিমছাম। পাশেই রয়েছে পুলিশ তথ্য কেন্দ্র। তখনও রাত জেগে দায়িত্ব পালন করছেন দু’জন পুলিশ। মাঝরাতের প্লাটফর্মে যাত্রীদের আনাগোনার পাশাপাশি রয়েছে ঘুমন্ত নারী, বৃদ্ধ, আর শিশুও।
ওয়েটিং রুমে কথা হলো মৌলভীবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সোহাগ আহমেদের সঙ্গে। জানালেন, এই মাঝ রাতে সিএনজি বা বাস কিছুই পাওয়া যাবে না এখানে। তবে ভোর ৫টা নাগাদ চলাচল শুরু হয়। আর কমলগঞ্জের রাস মেলাতে যাবার আগে ঘুরে আসতে পারেন সাতগাঁও। প্রবেশদ্বারে দর্শনীয় অনিন্দ সুন্দর ভাস্কর্য ‘চা কন্যা’। সাতগাঁও চা বাগানের সহায়তায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ২০১০ সালে নির্মাণ করে ভাস্কর্যটি।
চা বাগান, লেক, হাওড়, উঁচু নিচু পাহাড়, ঘন জঙ্গল, খনিজ গ্যাসকূপ আর আনারস, লেবু, পান, আগর ও রাবার বাগান দিয়ে সাজানো অদ্ভুত সুন্দর শ্রীমঙ্গল। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি শীত প্রধান অঞ্চল ও সবচেয়ে বৃষ্টি প্রধান অঞ্চল হিসেবেও শ্রীমঙ্গলের রয়েছে আলাদা পরিচিতি। দেশীয়দের পাশাপাশি বিদেশি ভ্রমণ পিপাসুদের কাছেও এই জায়গাটির রয়েছে আলাদা কদর।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শ্রীমঙ্গলে পাহাড় ও ঘন বনাঞ্চল থাকায় এখানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত ও শীত পড়ে। ফলে চা চাষ উপযোগী হওয়ায় এখানে গড়ে উঠেছে প্রায় ৩৮টি চা বাগান। যা এ অঞ্চল ও জেলার অর্থনীতির অন্যতম মাধ্যম। আর সে কারণে চায়ের রাজধানী বলে খ্যাত শ্রীমঙ্গলে গড়ে উঠেছে চা গবেষণা কেন্দ্র।
** ঠিক সময়েই ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস!
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৭
এইচএমএস/জিপি