সরষেসহ হরেক রকমের ভর্তা দিয়ে এ পিঠা তৃপ্তির সাথে খেতে পছন্দ করেন পথচারীরা। মঙ্গলবার (০৭ নভেম্বর) বিকেলে ফেনী শহরের জেল রোডের পাশে ভিড় দেখে থমকে দাঁড়াতে হলো, কাছে যেতেই দেখা গেল চিথই পিঠা বানানো হচ্ছে সেখানে।
ক্রেতারা বেশ মজা করেই খাচ্ছেন। বিক্রেতাও দারুন ব্যস্ত, তিন জন মিলেও সামাল দেয়া যেন দায় হয়ে পড়েছে। কথা হয় পিঠা খেতে আসা শহরের জেল রোডের ব্যবসায়ী আজগর আলী ও মামুনের সাথে। তারা বাংলানিউজকে জানান, গ্রামের বাড়িতেও চিথই তৈরি হয়-তবে এত ধরনের ভর্তা পাওয়া যায় না। সরষে ভর্তা, মরিচ ভর্তা আর পেঁয়াজ ভর্তা দিয়ে চিথই পিঠার মজাই আলাদা।
সেখানে পিঠা খাচ্ছিলেন ফেনী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির একদল ছাত্রী। তাদের একজন জানায়, কলেজ ও প্রাইভেট থেকে বাড়ি ফেরার সময় প্রায়ই এখানে পিঠা খেতে আসেন তারা, ভর্তা দিয়ে চিথই পিঠা খেতে দারুন মজা লাগে। চালের গুড়া, পানিসহ প্রাকৃতিক জিনিসপত্র দিয়ে বানানোয় রাস্তার পাশের পিঠাগুলোকে স্বাস্থ্য সম্মতই মনে হয় বলে জানালেন ওই ছাত্রীরা।
কথা হয় বিক্রেতা মো. শিজিল মিয়ার সাথে, তার বাড়ি সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জে। প্রতি শীতের মৌসুমে চিথই পিঠা বিক্রি করতেই তিনি সুদূর হবিগঞ্জ থেকে ফেনী আসেন। মৌসুম শেষে আবার বাড়ি ফিরে যান। তিনি জানান, বেশ ভালোই পিঠা বিক্রি হয়। শহরের সব শ্রেণী ও পেশার মানুষই তার দোকানে পিঠা খেতে আসে।
তিনি জানান, প্রতিদিন বিকাল ৪ টা থেকে বসে রাত ১০টা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি করেন। এ সময়ের মধ্যে প্রায় ২ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি হয়। মজুরীসহ সব মিলিয়ে ১২’শ টাকা খরচের পর লাভ থাকে ৮’শ টাকা। প্রতিটি পিঠা বিক্রি করা হয় ৫ টাকায়।
পিঠার সাথে থাকে সরষে ভর্তা, কাঁচা মরিচ, সিম ও ধনিয়া ভর্তা, পেঁয়াজ ও শুটকির ঝাল ভর্তা। শিজিল মিয়া বাংলানিউজকে জানান, ক্রেতারা এসব ভর্তা দিয়ে চিথই পিঠা খেতে খুবই পছন্দ করেন। তার সাথে কথা বলে জানা যায় চিথই পিঠা বানানোর প্রক্রিয়াও।
কিভাবে বানাবেন ‘চিথই’
চালের আটা পানিতে গুলিয়ে গরম তাওয়াতে ভেজে এই পিঠা তৈরি হয়। পিঠা তৈরির জন্য আটা ও পানির মিশ্রন অল্প তাপে মাটির খোলায় ভাজতে হয়। শীতকালের অত্যন্ত জনপ্রিয় এ পিঠাটি। তৈরি হওয়ার পর খোলা থেকে নামিয়ে খেতে পারেন খেজুরের গুড় অথবা বিভিন্ন রকম ভর্তা দিয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৭
এসএইচডি/আরআই