৯৯তম আর্মিস্টিস ডে উপলক্ষে এ দিনের তোলা কিছু বাছাইকৃত ছবি নিয়ে বাংলানিউজের পাঠদের জন্য এ আয়োজন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বেশিরভাগ ছবিই সাধারণত সাদাকালোতে দেখে এসেছে সবাই।
এ ছবিগুলোতে ফুটে উঠেছে যুদ্ধ শেষে বাড়ি ফিরতে থাকা যোদ্ধাদের ক্লান্তি, বন্ধু হারানো সৈনিকের উল্লাসের মধ্যে লুকিয়ে থাকা দীর্ঘশ্বাস এবং আহত যোদ্ধাদের অনিশ্চয়তা জড়ানো স্বস্তি।
ছবিটি ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টের। একজন ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা যুদ্ধবিরতির সংবাদ পড়ে শোনাচ্ছেন যোদ্ধাদের। যুদ্ধবিরতির সংবাদে উল্লাস প্রকাশ করছেন ক্লান্ত যোদ্ধারা। ফ্রান্স ও জার্মানির সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট নামে পরিচিত ছিল। ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টকেই বলা হয় এ যুদ্ধের মূল মঞ্চ। এ অঞ্চলের পূর্বদিক থেকে অগ্রসর হচ্ছিলো কেন্দ্রীয় শক্তি। পশ্চিম দিক থেকে পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছিলো মিত্রশক্তি। যুদ্ধের বেশিরভাগ লড়াই ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টে সংঘটিত হয়েছিল।
এ ছবিতে দেখা যাচ্ছে হাস্যোজ্জ্বল কয়েকজন ব্রিটিশ যোদ্ধা, যাদের অনেকে মাত্র কৈশোর অতিক্রম করেছে। তারা আগের দিন জার্মান বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে একটি সুড়ঙ্গপথ দখল করেছে। সাইনবোর্ডের লেখাটি নির্দেশ করছে সুড়ঙ্গটির অবস্থান।
যুদ্ধ শেষ হলেও এ যোদ্ধাদের মুখে হাসির কোনো চিহ্ন নেই। তারা বিদায় জানাচ্ছেন সহযোদ্ধা সার্জেন্ট হেনরি নিকোলাসকে। এ যুদ্ধে প্রায় সাত লাখ ব্রিটিশ সৈন্য নিহত হয়। তৎকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রাজা পঞ্চম জর্জ জয়মাল্য তুলে দিচ্ছেন অজানা এক যোদ্ধার কফিনে।
ছবিটির নাম আনন্দধ্বনি। যুদ্ধবিরতির সংবাদে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার পথে নেমে আসে উল্লসিত জনতার ঢল।
মিত্রশক্তির বিজয়ের পর চার্চের তিনজন সেবিকা বিশাল এক কবরস্থানের মৃত ব্যক্তিদের সমাধিতে জয় মাল্য গেঁথে দিচ্ছেন। এ যুদ্ধে সামরিক ও বেসামরিক মিলিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় চার কোটি। যুদ্ধের ময়দান থেকে বাড়ির পথে রওনা দিচ্ছেন কয়েকজন স্কটিশ সৈন্য। আনন্দের এ দিনে স্টকল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেছেন তারা।
এই বৃদ্ধ ফরাসি দম্পতি দীর্ঘ চার বছর জার্মান সৈন্যদের হাতে অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। মিত্রশক্তির সৈন্যরা তাদের এলাকা শত্রুমুক্ত করার পর ৩০৮তম ইনফ্যান্ট্রির দু’জন সৈন্যকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন তারা।
নিকটস্থ মেডিকেল ক্যাম্পের পথে হাঁটছেন কয়েকজন আহত যোদ্ধা। যুদ্ধ শেষ। তবুও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা ফুটে উঠেছে তাদের চোখে।
সাদাকালো ফিল্মে তোলা ছবিগুলো রঙিনে রূপান্তর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রয়স্টোন লিওনার্ড। ছবিগুলো রূপান্তর করতে কয়েক মাস সময় লেগেছে তার। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ কাজ করেছেন। কারণ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে লিওনার্ডের একটা সম্পর্ক রয়েছে। তার দাদা এ যুদ্ধেরই একজন যোদ্ধা।
৫৫ বছর বয়সী লিওনার্ড বলেন, আমি সবসময়ই বাবার কাছে দাদার যুদ্ধের কাহিনী সম্পর্কে জানতে চাইতাম। তিনি বলতেন, চার বছর যুদ্ধ করে দাদা ও তার সহযোদ্ধারা মাত্র ১০০ গজ অগ্রসর হতে সক্ষম হয়েছিলেন। নিজের মেশিনগানেরই একটি ফায়ারিং পিন আমার দাদাকে আহত করে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেই আঘাতের দাগ বয়ে বেড়িয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৭
এনএইচটি/এইচএ/