আরো একটু সামনে এগোতেই পরিষ্কার হলো বিষয়টি। চোখে পড়লো ‘ডিজিটাল মিনি বায়োস্কোপ’।
বায়োস্কোপের মালিক জামাল দেওয়ান নিজে একজন বাউল হলেও তার বায়োস্কোপে নেই গানের সুর। কারণ জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আধুনিক সময়ের ছেলে-মেয়েরা পুরনো ধাচের ঐ গানগুলো পছন্দ করে না। অনেকে তো আবার ভেতরের পুরনো ছবি দেখেও কেমন কেমন করে। তাই পুরনো ছবির পরিবর্তে বাচ্চাদের জন্য ডোরেমন, পকেমন, মিনা কার্টুন আর মটু-পাতলুসহ বিভিন্ন কার্টুনের চরিত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে এ ডিজিটাল বায়োস্কোপ।
সাধারণ বায়োস্কোপের ফোকরগুলো যেখানে করা হয় টিনের সাহায্যে এবং চাকতি লাগিয়ে, সেখানে এ ডিজিটাল বায়োস্কোপে রয়েছে সুন্দর গ্লাসের নকশা।
সাবেকি আমলে বায়োস্কোপের হাতল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে যেখানে গায়েন ছড়া কাটতেন ‘আরে চইলা আইলো সুন্দর বন, সামনে আছে, সুন্দর বনের বাঘ ভালুক সামনে আছে’, সেখানে এ ডিজিটাল বায়োস্কোপ প্রায় সম্পূর্ণরূপেই চুপচাপ। তবে এ ডিজিটাল বায়োস্কোপে চোখ লাগিয়েই শিশুরা উপভোগ করছেন বায়োস্কোপের স্বাদ। বায়োস্কোপ দেখা শেষ হলে কথা হয় ছোট্ট শিশু হামিম বিনতে তাহা’র (৫) সঙ্গে। বাংলানিউজকে সে বলে, ভেতরে অনেকগুলা কার্টুন দেখলাম। ডোরেমন, পকেমন, মিনা কার্টুন আর মটু-পাতলু আরো অনেক। আমার ভালো লেগেছে।
তবে তাহা’র বাবা গোলাম মোর্শেদ জানান, বায়োস্কোপ আমাদের একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেকে ধারণ করে। সেখানে গায়েনের গান থাকবে, তার সাথে বাজনা থাকবে, গান-বাজনার সাথে মিল রেখে একে একে ভেসে আসবে একেকটি অজানা দৃশ্য। তবেই না তাকে বায়োস্কোপ বলে মনে হবে। কিন্তু এ ডিজিটাল বায়োস্কোপে তো তার কিছুই নেই।
বাচ্চাদের ভালোলাগার বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে এটা করা, ঠিক আছে। কিন্তু তাতে যেন আমাদের সংস্কৃতির বিকৃতি না ঘটে সেদিকটাও তো খেয়াল রাখা উচিত- যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৭
এইচএমএস/আরআই