কিন্তু বুধবার (২২ নভেম্বর) ভোরে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড সংলগ্ন ৩০০ ফিট সড়কে এই চালশে নারীকে দেখে সবার চোখই যেনো আটকে গেলো!
কাগজ কিংবা পরিত্যক্ত বোতল টোকাতে গিয়ে ৩০০ ফিট সড়কের পাশে লেকের ধারে ওই নারীকে আবিষ্কার করলেন মিনা নামে আরেক নারী। ময়লা তোষকের ছেঁড়া কাপড় জড়ানো ওই নারী অনেকটা অচেতন হয়ে পড়েছিলেন।
ঝোঁপের ভেতর কাগজ টোকাতে গিয়েই কঙ্কাল সার ওই নারীকে দেখেন মিনা নামের ছিন্নমূল নারী। কাছে গিয়ে তো চোখ ছানা বড়া! আশপাশের পথচারীদের ডেকে ওই নারীর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তিনি।
রোগে কাঁতর নারী খিদেও যেনো আরও কাবু হয়ে গেছেন। উঁ-আঁ ছাড়া কোনো কথাই যেনো বলতে পারছিলেন না তিনি। এ অবস্থায় নিজের কাছে থাকা শুকনা খাবার ও পানির ব্যবস্থা করলেন মিনা। নিজ হাতেই খাওয়ালেন তাকে।
পেটে কিছু পড়ার পর দু’একটা কথা ফুটলো ওই নারীর মুখে। তিনি জানান, রাতের আঁধারে একজন ঝোঁপের ভেতর ফেলে গেছে তাকে। আলাবোলা বাক্যে নিজের নাম জেসমিন বলে জানালেন তিনি।
জান গেল, তার স্বামীর নাম গোলাম রহমান, যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক। তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। বড় মেয়ে সুমাকে বিয়েও দিয়েছেন। আর ছোট মেয়ে ঝুমা একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে।
আর ছেলে জিহাদ ঢাকার একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৪ বছর ধরে প্যারালাইসিস রোগী তিনি। টাইফয়েড জ্বর থেকে হঠাৎ প্যারালাইসিস হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তিনি।
কঙ্কালসার দেহ নিয়ে হাঁটা-চলা যেমন করতে পারেন না, তেমনি স্পষ্ট করে কথাও বলতে পারেন না। বাড়ির ঠিকানা জানতে চাইলে কেবল ‘ডুমনী’-ই বলতে পারলেন। আর কিছু বললেও তা বুঝা যায়নি।
উল্লেখ্য, ডুমনী খিলক্ষেতের পাশেই অবস্থিত একটি ইউনিয়নের নাম।
অসুস্থ নারীর কথা-বার্তা ও অসুস্থতার কথা শুনে পথচারীদের বলাবলি করতেও শোনা যায়, সংসারের বোঝা হয়ে মনে হওয়ায় হয়তো তার স্বামীই রাতের আঁধারে এখানে ফেলে গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৭
এমএ/