ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

মৃত্যুকে ধোঁকা দিতে পটু প্রাণীরা!

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৭
মৃত্যুকে ধোঁকা দিতে পটু প্রাণীরা! পটু প্রাণীরা।

জীবজগতের একটি অবধারিত ঘটনা মৃত্যু। পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করা প্রতিটি প্রাণীরই জীবনের অবসান হয় মৃত্যুর মাধ্যমে।

কিন্তু প্রকৃতিতে এমন কিছু প্রাণী আছে যারা অসাধারণ সব উপায় অবলম্বন করে মৃত্যুকে ফাঁকি দিতে জানে। এসব প্রাণীর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানার পর এদের অমর প্রাণী বললেও ভুল হবে না।



সুতরাং, জেনে নেওয়া যাক প্রাণী জগতের এ ধরনের অদ্ভুত কিছু সদস্য সম্পর্কে।

১ অমর জেলিফিশঅমর জেলিফিশক্ষুদ্রাকৃতির এসব জেলিফিশের প্রচলিত নাম অমর জেলিফিশ। বৈজ্ঞানিক নাম Turritopsis dohrnii। মৃত্যুকে ফাঁকি দিতে এরা নিজেদের বয়সকে উল্টোপথে পরিচালিত করতে পারে। এসব জেলিফিশ রোগাক্রান্ত হলে বা আঘাত পেলে দেহের কোষগুলো নবীন অবস্থায় ফিরে যায়। ফলে কোষগুলো আবার শুরু থেকে বয়সপ্রাপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। কৌশলে মৃত্যুকেও দূরে ঠেলে দেয় এ প্রক্রিয়া। এই জেলিফিশ নিয়ে গবেষণাগারে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন প্রাণীবিজ্ঞানীরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এদের বয়স নির্ণয় করার কোনো পদ্ধতি উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়নি।

২. গলদা চিংড়িগলদা চিংড়িসমুদ্রের তলদেশে ঘুরে বেড়ানো গলদা চিংড়ি অমর কিনা তা নিয়ে বিজ্ঞান মহলে বিতর্ক রয়েছে। কারণ এদের মৃত্যুর জন্য বয়সকে দায়ী করা যায় না। সাধারণত রোগাক্রান্ত হয়ে বা শিকারি প্রাণীর আক্রমণই এদের মৃত্যুর প্রধান কারণ। তাছাড়া, গলদা চিংড়ির দেহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাড়তে থাকে। তাই ঠিক কতো বছর বয়সে একটা গলদা চিংড়ির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়, তা বলার উপায় থাকছে না। কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূলে একটি গলদা চিংড়ি পাওয়া গেছে, যার বয়স ১৪০ বছর।

৩. কচ্ছপকচ্ছপগল্পে ধীরগতির কচ্ছপ দৌড় প্রতিযোগিতায় পিছনে ফেলে দিয়েছিলো খরগোশকে। বাস্তবেও এ প্রাণীর ক্ষমতা বিস্ময়কর। ২০১৬ সালে নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, যদি শিকারি প্রাণী বা রোগাক্রান্ত না হয় তবে কচ্ছপ হয়তো অনির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত বাঁচবে। সহজভাবে বললে, অমর প্রাণীর খেতাব পাওয়ার মতো সম্ভাব্য সব বৈশিষ্ট্যই কচ্ছপের মধ্যে বিদ্যমান।

৪. পুনরুৎপাদনশীল পোকাপুনরুৎপাদনশীল পোকাকৃমি জাতীয় পোকাগুলোকে বলা হয় প্ল্যানেরিয়ান ওয়ার্ম। প্রাণীটির প্রধান বৈশিষ্ট্য এর পুনরুৎপাদন ক্ষমতা। একটা পোকাকে যদি কেটে দু’ভাগ করা হয়, তবে সেখান থেকে দু’টি পৃথক পৃথক পোকা জন্মাবে। এভাবে অগণিত বার পুনরুৎপাদনে সক্ষম এ প্রাণী।

৫. টার্ডিগ্রেডটার্ডিগ্রেডএক মিলিমিটারের মতো দীর্ঘ এ অতিক্ষুদ্র প্রাণীটির আরেক নাম ওয়াটার বেয়ার (পানির ভালুক)। এরা তেজস্ক্রিয়তা, অতিমাত্রায় ঠাণ্ডা, চরম পানিশূন্যতা থেকে শুরু করে মহাশূন্যেও টিকে থাকতে পারে। পৃথিবীতে যত রকম মহাজাগতিক দুর্যোগ ঘটতে পারে তার প্রায় সবগুলোই মোকাবিলা করে টিকে থাকার ক্ষমতা রয়েছে এই টার্ডিগ্রেডের। এদের সাধারণত পুকুরের শুকিয়ে যাওয়া উদ্ভিদের মধ্যে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৭
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।