ক্রেতারাও হুমড়ি খেয়ে পড়েন পছন্দের পণ্যটি সুলভ মূল্যে কিনে নিতে। ব্যবসায়ীদেরও বছরের সেরা বিক্রি-বাট্টা হয় এই এ সময়টায়।
‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’র শুরুটা যুক্তরাষ্ট্রে হলেও, দিনটির ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও অর্থনৈতিক সাফল্যে কানাডা, মেক্সিকো, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপ-আমেরিকার অনেক দেশেও তা বেশ সমারোহে পালিত হয়ে আসছে।
প্রতিবছরের মতো এবারও ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’র জন্য অধীরচিত্তে অপেক্ষা করছিলেন পশ্চিমা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। অভাবনীয় ছাড়ে পছন্দের পণ্যটি কেনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় শপিং স্টোরগুলোতে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই জড়ো হয়েছেন ক্রেতারা।
ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে ক্রেতাদের বিশেষ আকর্ষণ থাকে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য যেমন- মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, টেলিভিশন, ওভেন, ওয়াশিং মেশিন, ব্লেন্ডার, কফি মেশিনসহ বিভিন্ন পণ্যের দিকে।
অনলাইন শপিংয়ের জনপ্রিয় সাইট অ্যামাজন ঘুরে দেখা গেল, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে ব্ল্যাক ফ্রাইডে।
আইফোন, স্যামসাংসহ বিভিন্ন মোবাইল ফোন কোম্পানিও তাদের লেটেস্ট হ্যান্ডসেটগুলো সুলভমূল্য ছাড়াও কিস্তিতে অর্ডারের সুযোগ দিয়েছে।
ডেল ইলেক্ট্রনিক্সের S2817Q মডেলের ২৮ ইঞ্চি মনিটর ৪৫১ পাউন্ডের বদলে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২৬০ পাউন্ডে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাক, ব্যাগ, হাত-ঘড়ি, প্রসাধনীও আছে ছাড়ের তালিকায়। তাছাড়া ফার্নিচার ও ডেকোরেশন পণ্যেও থাকছে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়।
ব্ল্যাক ফ্রাইডে শুধু ক্রেতাদের জন্য নয়, বিক্রেতারাও এতে অনেক লাভবান হন। যুক্তরাজ্যের ‘রিটেইলার রিসার্চ ও ভাউচার সেন্টারে’র হিসেব মতে, গতবছর সেদেশে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার (৭.৮ বিলিয়ন পাউন্ড) বেচা-বিক্রি হয়েছে।
এ বছরের ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে আরও ৭ শতাংশ বেশি বেচা-বিক্রি হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রতিযোগীদের চেয়ে বেশি ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে অনলাইন জায়ান্ট অ্যামাজনেও এবার রেকর্ড পরিমাণ প্রচারণা চালিয়েছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া নতুন প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা ও বিক্রি না হওয়া বিভিন্ন পণ্যের উপর ছাড় তো থাকছেই।
পশ্চিমা বিশ্বে বড় দিনকে (ক্রিসমাস) সামনে রেখে পালন করা হয় ব্ল্যাক ফ্রাইডে। অথচ বাংলাদেশের বিভিন্ন উৎসব বিশেষ করে ঈদ ও বৈশাখ ইত্যাদির আগেও দেখা যায়, ছাড় দেওয়ার বদলে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় ব্যবসায়ীরা।
পাশের দেশ ভারতের কিছু কিছু রাজ্যেও ব্ল্যাক ফ্রাইডের মতো দিবস পালন করা হয়। দিওয়ালি ও বৈশাখের আগে সে দেশের কিছু কিছু রাজ্যের শপিং স্টোরগুলোতে ছাড় দেওয়া হয়।
তবে গত কয়েক বছরে ভারতের স্বাধীনতা দিবস (১৫ আগস্ট) উপলক্ষে দেওয়া ছাড় ক্রেতা ও ব্যবসায়ী উভয়ের মধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা ও সাফল্য লাভ করেছে।
বাংলাদেশে ব্ল্যাক ফ্রাইডের প্রচলন না থাকলেও এবার কিছু কিছু অনলাইন শপ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনলাইন রিটেইলার দারাজ.কম.বিডিতেও দেখা গেল ‘ফাটাফাটি ফ্রাইডে’ নামে বিভিন্ন পণ্যের উপর ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৭
এনএইচটি/এমএ