মুহূর্তেই দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে ডেউয়া গাছতলায় লোকেদের ভিড় জমে যায়। যতো সময় গড়াচ্ছে মানুষের ভিড় ততোই বাড়ছে।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে এমন স্টেশন চত্বরে এভাবেই গানের আসর জমিয়ে তোলেন ভ্রাম্যমাণ গায়ক ভুট্টু মোহাম্মদ (৩০)।
ভুট্টু মোহাম্মদ হাতে একটি জর্দার কৌটায় তাল তুলে গাইছেন। গান শেষে শ্রোতাদের করতালির সঙ্গে পাচ্ছেন সম্মানি।
গাছতলায় দাঁড়িয়ে ভুট্টুর গান শুনছিলেন ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেসের যাত্রী মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, বাড়ি থেকে স্টেশনে আসি পৌনে ১১টায়। কিন্তু এসে শুনি ট্রেন বিলম্বে ছাড়বে। তাই মধুর সুরের গান শুনে এখানে এলাম। গান শুনে মন ভরে গেল। গায়ককে টাকা উপহার দিয়েছি। ভুট্টুর গান আমার প্রতীক্ষার সময়টাকে আনন্দময় করে তুললো।
বেশ কয়েকটা গান পরিবেশনের পর কথা হয় গায়ক ভুট্টুর সঙ্গে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দিনাজপুরের বিভিন্ন স্থানে গান গেয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। মূলত ট্রেনে ট্রেনে গান গেয়ে বেড়ান। গান শুনে মানুষ সন্তুষ্ট হয়ে উপহার হিসেবে যা দেয়, তাই দিয়ে চলে তার সংসার।
ভুট্টু বলেন, ভাওয়াইয়া, মারফতি, গজল, পল্লীগীতি, গান গেয়ে মানুষকে মুগ্ধ করি। যখন যে গানের প্রয়োজন তখন সে গান গাই। গান গেয়ে দিনে তিন থেকে চারশো টাকা পর্যন্ত উপার্জন হয়।
ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া উপজেলার চাঁপাতি গ্রামের মৃত নিমাঞ্জ হোসেনের ছেলে ভুট্টু মোহাম্মদ। সংসারে তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। সন্তানের মধ্যে সবার বড় মেয়ে জুঁই আক্তার স্থানীয় বড়াগী হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। এক ছেলে তৃতীয় শ্রেণি পড়ে অন্যজনের বয়স সবে তিন।
সন্তানদের উচ্চশিক্ষিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই তার জীবনের স্বপ্ন বলে জানান ভ্রাম্যমাণ গায়ক ভুট্টু মোহাম্মদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
এমআইএইচ/এমজেএফ