বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিত্র দু’টি দুজন নারীমূর্তির। এদের একজন নির্দেশ করছে ন্যায়বিচার, অপরজন নির্দেশ করছে বন্ধুত্ব।
১৫০৮ সালে পোপ দ্বিতীয় জুলিয়াস ভ্যাটিকান প্রাসাদে তার ব্যক্তিগত কয়েকটি কামরায় দেয়ালচিত্র আঁকার জন্য নিযুক্ত করেন রাফায়েলকে। তিনি তিনটি কামরায় দেয়ালচিত্র আঁকার কাজ শেষ করেছিলেন। রাফায়েলের বিখ্যাত দেয়ালচিত্র ‘স্কুল অব এথেন্স’ এগুলোরই একটি।
দেয়ালচিত্রের জন্য নির্ধারিত পরবর্তী কামরাটির নাম ‘হল অব কনস্তান্তিন’। এটি আগের কামরাগুলোর তুলনায় বেশ বড়। প্রচলিত দেয়ালচিত্র অংকন পদ্ধতির বদলে রাফায়েল এ কামরায় তেল রঙ ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী রাফায়েল তেল রঙে দেয়ালচিত্রের কাজ শুরু করেন। কিন্তু নারীমূর্তি দু’টি আঁকার পরই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর অন্য শিল্পীরা কামরার বাদবাকি দেয়ালচিত্রের কাজ শেষ করেন। ১৫৫০ সালে জর্জিও ভাসারি রচিত ‘লাইভস অব দ্য মোস্ট এক্সেলেন্ট পেইন্টার্স, স্কাল্পচারস অ্যান্ড আর্কিটেকটস’ বইতে দেয়ালচিত্রে তেল রঙের ব্যবহার নিয়ে রাফালের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু গবেষকরা এতোদিন ধরনের কোনো দেয়ালচিত্রের খোঁজ পাচ্ছিলেন না। একারণে বিষয়টা এতদিন রহস্যের চাদরে ঢাকা ছিল।
অবশেষে ভ্যাটিকানের ওই কামরাগুলো পরিষ্কার করা ও পুনরুদ্ধারের (রেস্টোরেশন) সময় রহস্যের সমাধান পেলেন গবেষকরা। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তারা নিশ্চিত হলেন নারীমূর্তিআঁকা চিত্রকর্ম দু’টি দেয়ালের অন্যসব চিত্রকর্মের চেয়ে আলাদা। এবং এ দু’টি রাফায়েলের নিজ হাতে আঁকা।
ভ্যাটিকানের পুনরুদ্ধার দলের সদস্য ফ্যাবিও পিয়াসেন্তিনি বলেন, চিত্রকর্ম দু’টিতে বুরুশের নিখুঁত কাজ ও অপ্রচলিত রঙের ব্যবহারই বলে দেয় এগুলো রাফায়েলের আঁকা। এতে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসের ছাপ বিদ্যমান। চিত্রকর্ম দুটি আঁকার আগে কোনো প্রাথমিক ড্রয়িং তৈরি করেননি শিল্পী। একমাত্র মাস্টার পেইন্টাররাই এমনটা করতে পারেন।
জানা যায়, রাফায়েলের চিত্রকর্ম দু’টিসহ ‘হল অব কনস্তান্তিন’র সম্পূর্ণ দেয়ালচিত্রকর্মগুলোকে আগের রূপে ফিরিয়ে আনতে (পুনরুদ্ধার করতে) আরও পাঁচ বছর লেগে যাবে। আর এতে খরচ পড়বে একত্রিশ লাখ মার্কিন ডলার। বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠীর অর্থায়নে এ পুনরুদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
এনএইচটি/জেএম