‘মানবাধিকার দিবস থেকে বিজয় দিবস’ শীর্ষক এ উৎসবের শেষ দিন শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা নিয়ে উপস্থিত হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্কুল ও সংগঠন থেকে আগত শিশুরা। এতে অংশগ্রহণকারীরা হলো- সোসাইটি ফর দ্য ওয়েলফেয়ার অব অটিস্টিক চিলড্রেন, কল্পরেখা, খেলাঘর, মৈত্রী শিশু দল, নৃত্যজন, বধ্যভূমির সন্তানদল, ইউসেপ স্কুল ও আলোর ধারা।
জাদুঘরের ভাস্কর্য অঙ্গনে স্থাপিত মঞ্চে আনন্দ-অনুষ্ঠান নিয়ে উপস্থিত হয় দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ শিশু-কিশোররা। নাচ, গান, আবৃত্তির শিশুরা তুলে ধরে তাদের দেশাত্মবোধ।
বিশেষ আয়োজনে একক ও দলীয় সংগীত পরিবেশন করে ‘সোসাইটি ফর দ্য ওয়েলফেয়ার অব অটিস্টিক চিলড্রেনে’র শিশু-কিশোররা। দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে নাচ পরিবেশন করে মৈত্রী শিশুদল ও নৃত্যজন। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে ইউসেপ স্কুল।
অনুষ্ঠানে ভিন্নধর্মী আয়োজন নিয়ে উপস্থিত হয় রাজধানীর ‘আলোর ধারা’ স্কুলের শিক্ষার্থীরা। মুক্তিযুদ্ধের থিমে নাচ, গান, নাটক, আবৃত্তি ও গল্প-কথনের সমন্বয়ে ২০মিনিট ব্যাপী হৃদয়গ্রাহী পরিবেশনায় তারা ফুটিয়ে তুলে ১৯৭১-এর ইতিহাস। শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের পড়ে শোনায় একাত্তরের চিঠি, তৈরি করে মানব স্মৃতিসৌধ। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা দৃশ্যায়ন করে যুদ্ধের ভয়াবহ পরিস্থিতি, দীর্ঘ নয় মাসের সংগ্রাম ও বিজয়ের গল্প।
অনুষ্ঠানে আগত একজন দর্শক আলমগীর বললেন, স্মার্টফোন যুগের শিশুদের মধ্যেও যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যাপক আকারে বিরাজ করছে সেটা এখানে না এলে বিশ্বাস হতো না। ভেবেছিলাম নতুন প্রজন্ম বাঙালি জাতির বহুমূল্য স্লোগান ‘জয় বাংলা’ ভুলতে বসেছে। কিন্তু আজকে বিজয়ের দিনে যেখানেই যাচ্ছি শিশুদের কন্ঠে শুনতে পাচ্ছি ‘জয় বাংলা’।
বিজয় উৎসবের আয়োজক মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানায়, সপ্তাহব্যাপী এ আয়োজনে বিভিন্ন পর্যায়ের সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠনগুলোর পাশাপাশি বিজয় দিবসে শিশু-কিশোরদের জন্য একটি আলাদা সেগমেন্ট রাখা হয়েছে। নতুন প্রজন্ম যাতে ইতিহাসকে লালন করে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে পারে তাই এ আয়োজন। তাছাড়া বাঙালি জাতি বহু প্রতিভার অধিকারী। প্রতিদিনই হরেক করম প্রতিভার সন্যিবেশ ঘটেছে আয়োজিত উৎসবে।
উৎসবে অংশগ্রহণকারী ‘আলোর ধারা’ স্কুলের শিক্ষিকা সোহানা শাকি বলেন, নতুন প্রজন্মের মাঝে দেশ প্রেম জাগ্রত করা আমাদের দায়িত্ব। আর এ ধরনের আয়োজন সেই সুযোগ এনে দেয়। তাই এ অসাধারণ উদ্যোগের জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে ধন্যবাদ। তাছাড়া আমাদের শিক্ষার্থীদের আগ্রহটাও ছিল প্রশংসনীয়।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উন্মুক্ত মঞ্চ, প্রধান মিলনায়তন ও ভাস্কর্য অঙ্গনে পরিবেশিত হচ্ছে বিজয় উৎসবের বিভিন্ন আয়োজন। এতে বিজয়ের দিনে আরও অংশগ্রহণ করছে- থিয়েটার আর্ট ইউনিট, বাড্ডা আলাতুন্নেসা উচ্চ বিদ্যালয়, তেজগাঁও কলেজ, ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীসহ অনেকে।
সপ্তাহব্যাপী এ উৎসবের অন্যান্য দিনগুলোতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন নিয়ে উপস্থিত হয়েছিল- জাহাঙ্গীরনগরের নাট্য দল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সংগঠন, কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, উখিয়া লোকশিল্পী পরিষদ, মৈত্রী থিয়েটার, দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজসহ প্রায় ৬০টি সংগঠন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
এনএইচটি/এসএইচ