সারাদিন ধরে চলে কেনাবেচার ধুম। যদিও কালের বিবর্তনে গ্রামীণ মেলা হারিয়েছে তার পুরনো জৌলুস, দিনে দিনে কমছে মেলার প্রচলন, তবুও কোনো এলাকায় যদি এখনও মেলার আয়োজন হয় সেখানে উপচেপড়ে মানুষের ভিড়।
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে আয়োজিত গ্রামীণ মেলায় শিশুদের আকৃষ্ট করতে রয়েছে হরেক পণ্যের সমাহার। সেসব পণ্যে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। কুমারের তৈরি মাটির টেপা পুতুল ও হাতে বানানো রঙিন কাগজের ঘুড়ির বদলে সেখানের জায়গা করে নিয়েছে প্লাস্টিকের ঘড়ি, পুতুল ও নানান পণ্য।
তাই বলে একেবারেই কিন্তু হারিয়ে যায়নি বাঁশের বাঁশি, সখের হাঁড়ি, মাটির তৈজসপত্র। আছে হাতি-ঘোড়া, টিনের তলোয়ার আর কাগজের ফুলও।
গ্রামীণ মেলায় দস্যুদের প্রধান আকর্ষণ বরাবরই নাগরদোলা। কালের বিবর্তনে অনেক কিছু বদলালেও বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে ঐতিহ্যবাসী এই আয়োজন। শহুরে আধুনিক রাইডার একটুও কমাতে পারেনি নাগরদোলার রোমাঞ্চ!
কন্যা শিশু ও কিশোরীরা মেলায় এসেই মুখিয়ে থাকে কখন হাতের তালু পায়ের পাতা রঙিন করে তুলবে আলতায়-আল্পনায়। নানান আল্পনায় নিজেকে রাঙাতে আগ্রহে কমতি নেই যুবতীদেরও।
মেলায় এসে নানান স্বাদের খাবার ছাড়া কি চলে? আর খুশির দিন মানেই তো বাঙালির কাছে মিষ্টান্ন ভোজ। তাই নানা রকমের মণ্ডা-মিঠাই, সন্দেস-কদমা-বাতাসা, তিলের খাজা সঙ্গে রয়েছে হালিম-চটপটির দোকান। উপচেপড়া কেতার ভিড়ে হিমসিম খাচ্ছেন দোকানিরা।
সারাদিন হৈ-হুল্লোর, আড্ডা আর খাওয়া-দাওয়ার পরেও কোথায় যেন অপূর্ণতা থেকে যায়! হ্যা, সেই অপূর্ণতা ঘোচাতে বিকেলের দিকে গান-বাজনার আয়োজন। মেলার এক কোনায় ঢাক-ঢোল, তবলা-হারমোনিয়ামে সুর তুলছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিল্পীরা। তাদের গানের সুরের টানে ছুটে আসছেন মেলা প্রাঙ্গণে আসা মানুষেরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
এমজেএফ