গ্রিনল্যান্ড হাঙরের উপর গবেষণা চালিয়ে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের প্রাণী বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় জানা যায়, বয়স ১৫০ পূর্ণ হওয়ার আগে এরা বংশবিস্তারও করতে পারে না।
গবেষকদলের প্রধান জুলিয়াস নিয়েলসেন বলেন, সমুদ্রের দূরবর্তী অঞ্চলে এদের বসবাস এবং স্বভাব অন্তর্মুখী। তাই এদের বিষয়ে এতদিন তেমন গবেষণা চালানো সম্ভব হয়নি।
এ প্রাণী খুবই ধীরে বাড়ে। প্রতিবছরে এদের দেহ আধ-ইঞ্চিরও কম বাড়তে দেখা যায়। এ থেকে গ্রিনল্যান্ড হাঙরের অস্বাভাবিক দীর্ঘ আয়ু সম্পর্কে অনুমান করেন গবেষকরা।
মূলত প্রাণীর চোখের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে এদের বয়স অনুমানে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পান বিজ্ঞানীরা। এদের চোখের গঠন বেশ বৈচিত্র্যময়। বয়স বাড়ার পাশাপাশি এদের চোখের লেন্সে এক ধরনের স্তর যুক্ত হয়। এসব স্তর একটা একটা করে সরালে সবশেষে প্রোটিনে তৈরি এক প্রকার টিস্যুর দেখা মেলে। জন্মের সময় কেবল এ টিস্যু নিয়েই জন্মায় এরা।
বয়স অনুমান করতে এদের চোখের নিউক্লিয়াসে অবস্থিত কেমিক্যাল যৌগ বিশ্লেষণ করা হয়। এ গবেষণায় কাজে লাগে দুর্ঘটনায় মৃত ২৮টি গ্রিনল্যান্ড হাঙর। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাঙরটির দৈর্ঘ্য ১৬.৫ ফুট এবং বয়স ৩৯২ বছর।
এদের দীর্ঘ আয়ুর রহস্য এখনও গবেষকদের অজানা। ধারণা করা হচ্ছে, শীতল পরিবেশ এদের দেহের তাপমাত্রা কমে যায়। এতে দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গের গতি কমে আসে, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষয়ও কম হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু এ হাঙর ১৫০ বছর বয়স হওয়ার আগে বংশবিস্তার করতে পারে না এবং এদের বসবাস উত্তর আটলান্টিকের শীতল পানিতে, সেহেতু প্রজাতিটি খুবই বিপদের মধ্যে রয়েছে। এখনই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে খুব সহজেই এরা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭
এনএইচটি/এএ