এ জাদুঘরের যাত্রা শুরু হয় ২০০৬ সালে। তৃণমূল লোকজ গ্যালারি দিয়ে এ জাদুঘরের যাত্রা শুরু হলেও পরে আরও তিনটি গ্যালারি সংযোজন করা হয়।
জাদুঘর ঘুরে দেখা গেল, প্রত্যেকটা গ্যালারিই আলাদা আলাদা বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে সাজানো। শ্রমজীবী মানুষের জীবন জীবিকা, হাসি-কান্না ও বিনোদনের বিচিত্র উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে ‘তৃণমূল লোকজ গ্যালারি’। এখানে প্রদর্শিত উপকরণের মধ্যে রয়েছে কৃষিজ উপকরণ, ভেষজ চিকিৎসা উপকরণ, বিভিন্ন সময়ের মুদ্রা, কাগজি নোট, অলংকার, গৃহস্থালী উপকরণ, বৈবাহিক উপকরণ ও মৃৎশিল্প।
বাংলাদেশের প্রায় সবক’টি নদ-নদীর পানি সংরক্ষিত আছে ‘নদী গ্যালারি’তে। গ্যালারিটি ২০১৬ সালে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এখানে রয়েছে সম্প্রতি হারিয়ে যাওয়া বেশ কয়েকটি নদীর পানি। এখানে আরও রয়েছে আরব সাগর, নীল সাগর, বঙ্গোপসাগরের পানি।
নদীর পানি ছাড়াও এ গ্যালারি রয়েছে নদীভিত্তিক বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের নানান উপকরণ, বাংলাদেশের নদ-নদীর তালিকা, বিভিন্ন ধরনের নৌকা, নদীভিত্তিক উৎসব, মৎস্য, জলজ উদ্ভিদসহ অরোও অনেক বিষয়।
বাংলাদেশের উত্তর জনপদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবন-যাপন, সংস্কৃতি, বাসস্থান, পোশাক, খাদ্যাভ্যাস, পেশা, উৎসব ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানের বিভিন্ন উপকরণে সমৃদ্ধ ‘সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গ্যালারি’। নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের শিল্পকলা, ধর্ম, পেশা, খাদ্যাভ্যাস ও জীবন-যাপন সংক্রান্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও প্রদর্শিত হয়েছে এ গ্যালারিতে।
২০১৭ সালে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয় ‘মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারি’। এখানে প্রাচীন যুগ থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আলোকচিত্র ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ প্রদর্শন করা হয়েছে। এখানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ, রণাঙ্গনের ইতিহাস এবং দেশের বিভিন্ন বধ্যভূমির মাটি।
জাদুঘরের ব্যাপারে কথা হয় উদ্যোক্তা ড. মুহম্মদ শহীদ উজ জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, খেটে খাওয়া মানুষগুলোর রক্ত-ঘামে প্রতিষ্ঠিত আজকের এ সভ্যতা। আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের শিকড় নতুন প্রজন্মকে জানানোর প্রয়াসেই জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা।
জানা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে এ জাদুঘর। শিক্ষার্থীদের স্টাডি ট্যুর সম্পূর্ণ ফ্রি এবং অন্যান্য দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্য-২০ টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
এসএইচডি/এনএইচটি/আরএ