শীতের এসব ফুলের বাগান ও চাষাবাদ নিয়ে কথা হয় ফেনী সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রাফিউল ইসলাম রাসেলের সঙ্গে।
তিনি জানান, শীত মৌসুমে বাংলাদেশের নিজস্ব ফুল কম হলেও শীতপ্রধান বিভিন্ন দেশের ফুল চমৎকারভাবে মানিয়ে গেছে এদেশের পরিবেশে।
শীতের কয়েকটি ফুলের ব্যাপারে আলাপ হয় এ কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে।
ডালিয়া
শীত মৌসুমের এটি খুব জনপ্রিয় ফুল, এদের পাপড়ির সৌন্দর্য আর চমৎকার বিন্যাস সহজেই মানুষকে মুগ্ধ করে। পাতা করাতের মতো খাঁজকাটা। ডালিয়ার একক ও যুগ্ম ফুল রয়েছে। লাল, চকোলেট, হলুদ, সাদা, গোলাপি, বেগুনি প্রভৃতি বর্ণের হয় ফুল। এর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি জাত হলো অ্যানিমোন, ডেকোরেটিভ, কলারেট, পিওনি, পমপন, মারলিন ইত্যাদি।
গাঁদা, বাংলাদেশে পরিচিতি ফুলগুলোর মধ্যে গাঁদা অন্যতম। কোনোটা দেখতে একেবারে কমলা রঙের, আবার হলুদ পাপড়ির থোকার মধ্যে খয়েরি রঙের পাপড়িও কিছু রয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশে গাঁদার পাঁচটি জাত রয়েছে। বড় ইনকা গাঁদা, ছোট চায়না গাঁদা, রক্ত গাঁদা, দেশি গাঁদা, জাম্বো গাঁদা। আদি নিবাস মেক্সিকোতে।
চন্দ্রমল্লিকা
ইংরেজি নাম ক্রিসেস্থিমাম। এ ফুলটি আমাদের দেশের প্রকৃতিপ্রেমীদের মোহাবিষ্ট করে রেখেছে। ফুলটির রয়েছে শতাধিক প্রজাতি। এমন কোনো রং নেই যা চন্দ্রমল্লিকার প্রজাতিতে নেই। রঙের দিক থেকে এরা অতুলনীয়।
কসমস
শীত মৌসুমের আরেক ফুল কসমস। আদি নিবাস মেক্সিকোতে হলেও বাংলাদেশিরা এ ফুলকে নিজেদের আপন করে নিয়েছে, যার কারণে বেশ জনপ্রিয় ফুলটি। গাছ ৯০ থেকে ১২০ সেমি বড় হয়। ফুল সাদা, লাল বা গোলাপি বর্ণের হয়।
কৃষ্ণকলি
বাংলাদেশের শীত মৌসুমের নিজস্ব ফুল। হাত দেড়েক উঁচু গাছে ফোটে ছোট ছোট ফুল, সাদা আর গোলাপি- এ দুই রঙের হয় ফুলটি।
গ্যাজানিয়া
আদি নিবাস দক্ষিণ আফ্রিকা হলেও বাংলাদেশের শীত মৌসুমের জনপ্রিয় ফুল এটি। লতানো। পাতা সরু, লোমযুক্ত। ফুল অনেকটা সূর্যমুখীর মতো। সাদা, লাল, কমলা, হলুদ রঙের ফুল হয়। পাহাড়ি এলাকায় এরা ভালো জন্মে।
পিটুনিয়া
আফ্রিকা ও আর্জেন্টিনার ফুল। তবে ক্রমেই বাংলাদেশের শীত মৌসুমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তা। ঘণ্টাকৃতির এক একটি ফুল ফোটে গাছের ডালে ডালে। সাদা, বেগুনি, গোলাপি রঙের ফুল ফোটে জাতভেদে।
কৃষি কর্মকর্তা রাফিউল ইসলাম রাসেল জানান, টবেই চাষাবাদ করা যায় শীত মৌসুমের ফুলগুলো। সে জন্য ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি মাপের টব যথেষ্ট। ছোট আকৃতির গাছ ছোট টবে। ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকাসহ বড় গাছগুলোর জন্য ১০-১২ ইঞ্চি টব প্রয়োজন হবে। প্রতি টবের জন্য দোআঁশ মাটির সঙ্গে তিন ভাগের এক ভাগ পরিমাণ জৈব সার মিশিয়ে মাটি তৈরি করা গেলে ভালো।
তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে চারার বয়স যেন মাসখানেক হয়। চারা লাগানোর পর আস্তে আস্তে চাপ দিয়ে গোড়ার মাটি শক্ত করে দিতে হবে। গাছে পানি দেওয়ার সময় শুধু গাছের গোড়ায় পানি না দিয়ে ঝাঁঝরি দিয়ে গাছের ওপর থেকে বৃষ্টির মতো গাছ-পাতা ভিজিয়ে নিয়মিত হালকা পানি দেওয়া ভালো। এতে গাছ বেশি সতেজ থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৮
এসএইচডি/এএ