আবার কিছু সম্প্রদায়ের কাছে এ পাখি পূজনীয়। সনাতন ধর্মমতে লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা।
তবে বিজ্ঞানীরা পেঁচাকে শুভ কিংবা অশুভ কোনোটাই মানতে নারাজ। পেঁচা অন্য সবার মতোই প্রাণিজগতের একজন সদস্য। আর পেঁচার রয়েছে কিছু অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য যা হয়তো অনেকেরই অজানা।
১.
গ্রেট হর্ন্ড পেঁচাসহ কিছু প্রজাতির পেঁচারা পানিতে সাঁতার কাটতে পারে। শিকার ধরতে প্রায়ই পেঁচাকে জলাশয়ের কাছাকাছি যেতে হয় এবং পালক ভিজে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু পেঁচার মতো ভারী পালকের পাখির পক্ষে ভেজা পালক নিয়ে ওড়া সম্ভব না। তখন এরা ডানার সাহায্যে সাঁতরে তীরে পৌঁছায়।
২.
পেঁচাকে সাধারণত নিশাচর পাখি বলা হয়। কিন্তু সব পেঁচা নিশাচর না। গ্রেট গ্রে, নর্দান হক্, নর্দান পিগমিসহ পেঁচার আরও কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে যারা দিনের বেলা শিকার করে। তবে এদের নিশাচর না হওয়ার জন্য দায়ী বিবর্তন। কারণ, এরা যেসব অঞ্চলে বসবাস করে সেখানে রাতের বেলা তেমন কোনো শিকার পাওয়া যায় না।
৩.
পেঁচার ঘাড়ের বৈশিষ্ট্য বিস্ময়কর। এদের ঘাড়ে ১৪টি অস্থিসন্ধি থাকে। মানুষের ঘাড়ে থাকে এর অর্ধেক। এ অনন্য দেহ বৈশিষ্ট্যের জন্য পেঁচার ঘাড় ২৭০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘুরে যেতে পারে। এ দক্ষতা পেঁচাকে টিকে থাকতে সাহায্য করে। এরা সহজে চোখ নাড়াতে পারে না। ফলে ঘাড় ঘুরিয়ে চারপাশের উপর নজর রাখতে হয় এদের।
৪.
কিউবার ‘জায়ান্ট আউল’ হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আকৃতির পেঁচা। এদের উচ্চতা প্রায় সাড়ে তিন ফুট। তবে এরা অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং গবেষকরা নিশ্চিত না যে এরা উড়তে পারতো কিনা। যদি এদের ওড়ার ক্ষমতা থাকতো, তবে এদেরকেই বলা যেত উড়তে জানা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাখি। কিউবার বনাঞ্চলে এদের দেহাবশেষ আবিষ্কার করেন গবেষকরা।
৫.
মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতিতে পেঁচা অনেক উপকারী ভূমিকা পালন করে। এসব অঞ্চলের পেঁচাদের প্রধান শিকার ইঁদুর। আর এই ইঁদুর হচ্ছে ফসলের শত্রু। ইসরায়েল, জর্ডান ও প্যালেস্টাইন অঞ্চলে কৃষিজমির আশপাশ দিয়ে পেঁচার জন্য বাসা বানিয়ে রাখা হয়। এক জোড়া পেঁচা বছরে গড়ে ছয় হাজার ইঁদুর শিকার করে।
৬.
কিছু কিছু পেঁচার নকল চোখ থাকে, যেমন- নর্দান পিগমি আউল। এদের চোখের রং উজ্জ্বল হলুদ। কিন্তু এদের মাথার পেছনে কালো রঙের কিছু পালক আছে যা দেখলে অবিকল চোখ বলে মনে হবে। শিকারি প্রাণীকে বিভ্রান্ত করে এ নকল চোখ।
৭.
আর্কটিকে বসবাসকারী তুষার পেঁচারা শীতের মৌসুমে দক্ষিণ দিকে তিন হাজার মাইল পর্যন্ত ভ্রমণ করে।
৮.
পেঁচা দুই কানে দুই রকম শব্দতরঙ্গ শনাক্ত করতে পারে।
৯.
নারী পেঁচারা আকৃতিতে পুরুষ পেঁচার চেয়ে বড়।
১০.
পেঁচারা বাসা তৈরি করতে পারে না। এরা বেশিরভাগ সময়ই গাছের কোটরে বসবাস করে। অন্য পেঁচার পরিত্যক্ত গাছের কোটরই বেছে নেওয়া পছন্দ পেঁচাদের।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৮
এনএইচটি/এএ